প্রতীকী ছবি।
আনুষ্ঠানিক ভাবে বিচ্ছেদ না হলেও গত বছরের বিধানসভার ভোটে জোটের পর থেকে আর একসঙ্গে কর্মসূচিতে দেখা যায়নি সিপিএম ও কংগ্রেসকে। ভবানীপুর ও শান্তিপুরের বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার প্রশ্নে দু’দলের মধ্যে দূরত্বও তৈরি হয়েছিল। কলকাতা-সহ প্রায় সব পুরসভার ভোটেই দু’দল আলাদা লড়াই করেছে। এক বছরের বেশি বিরতির পরে আবার যৌথ আন্দোলনের ডাক দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর আহ্বানকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কথা বললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও। নির্দিষ্ট বিষয়ে আন্দোলনের কর্মসূচির কথা বললেও আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতেই ফের জোটের সলতে পাকানো শুরু হচ্ছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের অভিমত।
রাজ্যে নিয়োগ-দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ন্যায্য চাকরি-প্রার্থীদের দাবির সমর্থনেই বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা করার জন্য বামেদের উদ্দেশে আবেদন জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে সিপিএমও জানিয়েছে, বিজেপি এবং তৃণমূলকে বাদ দিয়ে সব সংগঠনকে নিয়েই তারা বড় আন্দোলনের পথে যেতে চায়। সেই লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনাও শুরু করেছে বামেরা। ছাত্র-যুবদের সামনে রেখে চাকরির দাবিতে এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে আন্দোলনের পরিকল্পনা নিচ্ছে তারা। অধীরবাবুর আহ্বানের পরে কংগ্রেসকেও এমন উদ্যোগে শামিল করতে আগ্রহী আলিমুদ্দিন।
মেধা-তালিকার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে ময়দানে অবস্থান চালাচ্ছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) চাকরি-প্রার্থীরা। গান্ধীমূর্তির কাছে ওই অবস্থানে বুধবার ফের গিয়েছিলেন অধীরবাবু। তিন দিন আগে ইদের দিন যেখানে গিয়েছিলেন সেলিম। চাকরি-প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন ছেলেমেয়েরা আকাশের নীচে বসে আছে। সরকারের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। নিয়োগে দুর্নীতির জন্য আদালত তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু ন্যায্য চাকরি-প্রার্থীদের সরকার নিয়োগ করছে না। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন দরকার। বামপন্থীদের কাছে আবেদন করছি, তাঁরা বড়সড় আন্দোলনের পরিকল্পনা করছি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে বলছি, আমরা সর্বতো ভাবে সেই আন্দোলনের সঙ্গে থাকব।’’ পরে বিধান ভবনেও তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষকদের এই আন্দোলনে যে ডাকবে, সেখানেই যাব। আমরা প্রস্তুত। আমরা রাজনীতিকরণ করতে চাই না।’’ ক্যান্সারে আক্রান্ত এক চাকরি-প্রার্থী আদালতের নির্দেশে নিয়োগ পেয়েছেন কিন্তু বাকিদের কী হবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অধীরবাবু।
এই প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন, ‘‘খুচরো খুচরো আন্দোলন, আলাদা লড়াই করে হবে না। অধীরবাবুর বক্তব্যকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের শিক্ষক, যুব ও ছাত্র সংগঠন এবং নানা ক্ষেত্রে নিয়োগে বেনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত মঞ্চগুলিকে নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে সকলেই এই আন্দোলনে এগিয়ে আসুন।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘এসএসসি-র চাকরি-প্রার্থীরা ওখানে বসে আছেন, প্রায় ৫০০ দিন হতে চলল। সরকার ভেবেছিল ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া যাবে। তার পরে আগের ইদের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ওঁদের নিয়োগ করা হবে। কিন্তু সে সব আশ্বাসে যে ভরসা রাখা যায়নি, ওঁরা বুঝতে পারছেন।’’
ছাত্র-নেতা আনিস খানের মৃত্যুর ‘বিচার’ চেয়েও রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সিপিএম। সেলিম এ দিন বলেন, উচ্চতর আদালতে আইনি লড়াই আনিসের পরিবার লড়বে। আর রাস্তায় রাজনৈতিক লড়াই তাঁরা চালিয়ে যাবেন। হাওড়ায় এ দিনই বাম ছাত্র-যুবেরা পথে নেমেছিল। পুলিশই যে ঘটনায় অভিযুক্ত, সেখানে পুলিশের তদন্তে কী ভাবে ভরসা করা যাবে— এই প্রশ্নই তুলেছে বাম ও কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy