মনোনয়ন জমা দেওয়ার পথে নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র জেরে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে আগামী দু’দিন। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে আসন্ন বিধানসভা উপনর্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সম্প্রসারণের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানাল কংগ্রেস। রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হওয়ার কথা আগামী ১৩ নভেম্বর । তার জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে কাল, শুক্রবার পর্যন্ত। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বুধবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (সিইও) চিঠি দিয়ে আর্জি জানিয়েছেন, ঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কার প্রেক্ষিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ২৫ অক্টোবরের পরে আরও তিন দিন বাড়ানো হোক।
রাজ্যের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা মঙ্গলবার রাতে ঘোষণা করা হয়েছে এআইসিসি-র অনুমোদনের পরে। ফলে, কংগ্রেস প্রার্থীদের হাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় এমনিতেই কম। সংশ্লিষ্ট জেলায় দলের প্রতীক সংবলিত ফর্ম এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস থেকে পাঠানো শুরু হয়েছে। অন্যান্য দল অবশ্য মনোনয়নের সময় বাড়ানোর আর্জি এখও জানায়নি। উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া কেন্দ্রে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) প্রার্থী পিয়ারুল ইসলামকে সমর্থনের কথা এ দিনই আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। পিয়ারুলের মনোনয়নের জন্য আজ, বৃহস্পতিবার বসিরহাটে উপস্থিত থাকার কথা আইএসএফের চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর।
উত্তর ২৪ পরগনারই অন্য কেন্দ্র নৈহাটিতে মনোনয়ন ঘিরে উঠে এসেছে বৃহত্তর বাম ঐক্যের ছবি। ওই কেন্দ্রে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনকে সমর্থন করছে বামফ্রন্ট। এর আগে নানা প্রশ্নে রাস্তায় একসঙ্গে মিছিল হয়েছে, বিক্ষোভ-অবস্থান হয়েছে। তবে বৃহত্তর বাম শক্তির এই নির্বাচনী সমঝোতার ছবি সাম্প্রতিক কালে এই রাজ্যে দেখা যায়নি। নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের লিবারেশন প্রার্থী দেবজ্যাতি মজুমদারের মনোনয়ন জমা দেওয়া উপলক্ষে মিছিল ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগা জেলায় সিপিএমের নেতা পলাশ দাস ও গার্গী চট্টোপাধ্যায়, ফরওয়ার্ড ব্লকের সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সিপিআইয়ের গৌতম বিশ্বাস প্রমুখ। ছিলেন লিবারেশনের পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইন্দ্রাণী দত্তেরা। লিবারেশন নেতৃত্বের বক্তব্য, রাজ্যে এই প্রথম বামফ্রন্ট ও তার বহির্ভূত বাম শক্তির নির্বাচনী ঐক্য হয়েছে, যা বাম আন্দোলনে ‘নতুন আশা ও উদ্দীপনা’র সঞ্চার করছে। নৈহাটির বিভিন্ন এলাকায় ন্যায়-বিচারের দাবিতে সম্প্রতি বড় সংখ্যায় মহিলারা যেমন পথে নেমেছেন, তেমনই বামপন্থীরা তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষের সহাবস্থান ও সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে বিজেপির ‘চক্রান্ত’ ও তৃণমূল কংগ্রেসের ‘অপশাসনে’র বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রতিক গণ-প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে তাঁদের ফল ভাল হবে বলে বাম নেতৃত্বের আশা।
প্রশ্ন উঠছে, আর জি কর-কাণ্ডের প্রভাব কি উপনির্বাচনে পড়বে? সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, ‘‘আর জি করের ঘটনার আগেও রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে। এ বার বৃহত্তর বাম ঐক্য হয়েছে। আর জি করের ঘটনায় মানুষ আবার দেখেছেন, রাজ্যের সরকার দুর্নীতি, দাপট, অপরাধের পক্ষে। প্রতিবাদের প্রভাব নির্বাচনে পড়বে কি না, নির্বাচনই বলবে। তবে সুষ্ঠু ভাবে ও শান্তিতে মানুষ নিজের ভোট দিতে পারলে তৃণমূলের বিপদ হবে, বিজেপিরও খুব সুবিধা হবে না।’’ তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষের দাবি, চিকিৎসক আন্দোলনের মতো ‘বাম ও অতি-বামের আঁতাঁত’ প্রার্থী তালিকায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে তাতে ভোটের ফলে কোনও প্রভাব পড়বে না, ৬ আসনে জিতবে তৃণমূলই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy