সুকান্ত মজুমদার এবং অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে ধাক্কা দিতে কার্যত দলের ‘দরজা’ খুলে দিল কংগ্রেস ও বিজেপি। শুক্রবার তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া অনুশাসনের বার্তাকে সামনে রেখে এই কৌশল নিল দুই বিরোধী দল।
দলে ‘কোণঠাসা’ হচ্ছেন, শনিবার এই দাবি করে তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের পুরনো নেতারা আর কত দিন অপমান সহ্য করে পড়ে থাকবেন?’’ আর সাগরদিঘি ভোটের ফলকে সামনে রেখে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের দলে ডাকলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তাঁর কথা, ‘‘ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসুন।’’
তৃণমূল অবশ্য পাল্টা বিঁধেছে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আলাদা আলাদা ডাকার কী আছে! কংগ্রেস তো এখন বিজেপির ‘এ’ টিম হিসেবে কাজ করছে। ফলে এটাকে যৌথ বিবৃতি বলেই ধরে নিচ্ছি।’’ পাশাপাশি তাঁর খোঁচা, ‘‘বিজেপি থেকে তৃণমূলে তো আসছেই। যাঁরা কংগ্রেস করতে চান, তাঁরাই বরং তৃণমূলে চলে আসুন। এ রাজ্যে তৃণমূলই তো আসল কংগ্রেস।’’
কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে নেতামন্ত্রীদের একাধিক অনুশাসনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। প্রশাসনিক বিষয় ছাড়া সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে নিষেধ করেছেন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ (ববি) হাকিমকেও। সেই চর্চায় এ দিন নতুন মাত্রা যোগ করে রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে বাঁশি সঙ্গীত হারা..।’’ ববি অবশ্য এ-ও বলেন, ‘‘এটা মজা করে বলেছি। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা সবাইকেই মানতে হবে। আমিও মেনে চলছি।’’ সেই সূত্রেই সুকান্ত বলেন, ‘‘তৃণমূল যাঁদের হাতে তৈরি, তাঁদের জায়গা দখল করে নিয়েছেন ভাইপো। তৃণমূল চালাচ্ছে বেসরকারি সংস্থা।’’ তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্তই তো দখল করেছেন বিজেপিসভাপতি পদ।’’
অন্য দিকে, সাগরদিঘির ভোটের হার নিয়ে দলের জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাদের একাংশ মমতার তোপের মুখে পড়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, ‘‘এই উপনির্বাচনে তো তৃণমূলের প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন খোকাবাবু ভাইপো। তাঁকে কেন দায়ী করছে না তৃণমূল?’’ তার পরই মুর্শিদাবাদ থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের কংগ্রেসে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ দিন ভগবানগোলা, বেলডাঙা, রঘুনাথগঞ্জ ও বড়ঞার কিছু তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগ দেন। সেখানে অধীর বলেন, ‘তাঁদের অন্তরে কংগ্রেস আছে তো বটেই। তাদের জন্ম কংগ্রেসে।’’
সাগরদিঘির দায়িত্বে থাকা মুর্শিদাবাদে দুই সাংসদ খলিলুর রহমান, আবু তাহের, রাজ্যের মন্ত্রী আখরুজ্জামান ও একাধিক বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়েই তৃণমূলে গিয়েছিলেন। অধীরের ডাক ফিরিয়ে তাহের বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাসঘাতকতা করি না। তা ছাড়া, উনিও অন্য একটি দলের সাংসদ। আমি ডাকলে উনি কি আমার দলে আসবেন?’’ মন্ত্রী আখরুজ্জামান বলেন, ‘‘মন্ত্রী করে আমাকে মুখ্যমন্ত্রী যে সম্মান দিয়েছেন, তা কখনও ভুলব না। আমি কংগ্রেসে যাব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy