বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে অবরোধ কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। — ফাইল চিত্র
বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি ভাঙার ঘটনার পরে, দু’দিন কেটে গেলেও ধরা পড়েনি ঘটনার জড়িত কেউ। কংগ্রেসের হুঁশিয়ারি, আজ, মঙ্গলবারের মধ্যে পুলিশ কিনারা না করতে পারলে আন্দোলনে নামা হবে। এরই মধ্যে সোমবার আসানসোলে এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে মূর্তি ভাঙা নিয়ে সরব হন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর চলছেই।
শনিবার রাতে মানকর স্টেশন রোড লাগোয়া কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আবক্ষ মূর্তিটি তুলে নিয়ে গিয়ে ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। রবিবার সেখান থেকে কিছুটা দূরে রাস্তায় মূর্তির কিছু অংশ মেলে। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। মানকর স্টেশন রোড অবরোধ করেন তাঁরা। তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে পুলিশ অবরোধ তুললেও সোমবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ ধরা না পড়ায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের নেতারা।
জেলা কংগ্রেসের নেতা দেবেশ চক্রবর্তীর দাবি, মূর্তির ভগ্নাবশেষও খুঁজে বার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পুলিশ। তবে সোমবার পর্যন্ত কোনও কিছু মেলেনি। আজ, মঙ্গলবার ইন্দিরা গাঁধীর জন্মদিন উপলক্ষে দলের প্রদেশ নেতাদের আসার কথা। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই আন্দোলনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে দেবেশবাবু জানান। কংগ্রেস নেতারা জানান, আপাতত ওই জায়গায় বিধানচন্দ্রের ছবি রাখা হবে। পরে সেখানে নতুন মূর্তি বসানো হবে।
এ দিনই বার্নপুরে ডাককর্মীদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন সিপিএম নেতা সুজনবাবু। তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে লেনিন, রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। সম্প্রতি কখনও বিদ্যাসাগরের মূর্তি, আবার কখনও বিধানচন্দ্রের মূর্তি ভাঙার ঘটনা ঘটছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি দেশ জুড়ে সমস্ত পুরনো ঐতিহ্য নষ্ট করছে। কাউকে পছন্দ না-ও হতে পারে। সে জন্য তাঁর মূর্তি ভাঙা ঠিক নয়। এ সব ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে।’’ তৃণমূলের প্রশ্রয়েই বিজেপির ‘ঔদ্ধত্য’ বাড়ছে বলে দাবি করেন তিনি।
বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সিপিএম অতীতে মনীষীদের মূর্তি কতটা সম্মান করেছে তা জানা আছে। ওরা এখন অপ্রাসঙ্গিক।’’ তাঁর দাবি, দুর্গাপুরের রূপকার বিধানচন্দ্রের মূর্তি যারা ভেঙেছে, পুলিশ তাদের খুঁজে বার করুক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারিও দাবি করেন, ‘‘এই গুণীজনেরা যখন জীবিত ছিলেন, তখন সম্মান দেয়নি সিপিএম। এখন বড়-বড় কথা বলে ওরা।’’ মূর্তি ভাঙাকে প্রশ্রয়ের সংস্কৃতি তাঁদের নেই মন্তব্য করে তাঁর দাবি, লেনিনের জন্মদিনে আসানসোলে তাঁর মূর্তি সাজার উদ্যোগ তৃণমূল জমানায় হয়েছে।
কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) সন্দীপ কররা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। বেশ কিছু সূত্রে পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত দোষীদের ধরা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy