আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। ফাইল চিত্র।
নিজের রাজনৈতিক ভিত্তিভূমিতে তাঁর কিছু প্রভাব আছে। বিধানসভাতেও তিনি ছিলেন নজরকাড়া বক্তা। ফরওয়ার্ড ব্লকের পাট চুকে যাওয়ার পরে সেই তরুণ প্রাক্তন বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জকে (ভিক্টর) দলে টানতে উৎসাহ দেখাতে শুরু করেছে নানা দল। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে ভিক্টরের কথাবার্তা এগিয়েছে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেসও। তবে ভিক্টর এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সিপিআইয়ের তরুণ নেতা কানহাইয়া কুমার বাম শিবির ছেড়ে এখন কংগ্রেসে। রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’তেও তিনি শামিল। এ রাজ্যেও বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং সিপিএম থেকে আসা আব্দুস সাত্তার এখন প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা। সেই পথেই কি ভিক্টরকেও দেখা যাবে? এই চর্চা জোরালো হয়েছে বিধান ভবনে গিয়ে ভিক্টর এবং ফ ব থেকে বহিষ্কৃত বা ওই দল ছেড়ে আসা তাঁর আরও কিছু সঙ্গী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করায়। এআইসিসি-র মিডিয়া ও কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান এবং ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অন্যতম ভারপ্রাপ্ত নেতা জয়রাম রমেশের সঙ্গেও ভিক্টরের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কংগ্রেস নেতৃত্ব ভিক্টরকে তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার অনুরোধ করে তাঁকে সময় দিয়েছেন।
ভিক্টরের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ মেনে নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু বলছেন, ‘‘কথা হয়েছে। পছন্দ হলে, কংগ্রেস ভাল লাগলে ওঁরা এগিয়ে আসতে পারেন। দরকারে আবার এসে কথা বলতে পারেন, সে কথাও বলেছি। তবে ওঁরা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।’’ বাম জমানায় শাসক বামফ্রন্টের শরিক ফ ব-র সঙ্গে উত্তর দিনাজপুরে লড়াই ছিল কংগ্রেসের। সময় ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তনে সেখানে তৃণমূল এবং বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াই। এমতাবস্থায় ভিক্টরের নিজস্ব প্রভাব এবং সংখ্যালঘু রাজনীতির সমীকরণ তাঁদের পক্ষে যেতে পারে, এই অঙ্ক মাথায় রাখছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বিধায়ক থাকার সময়েই একাধিক বার ভিক্টরকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের তরফে, কখনও যোগাযোগ করেছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। ভিক্টরের সঙ্গে ফ ব-র সম্পর্কচ্ছেদের পরে তৃণমূলের তরফে ফের যোগাযোগ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব তাঁকে দলে টানতে খুব আগ্রহী নন। তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, ‘‘উনি (ভিক্টর) উৎসাহী হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বই নেবেন।’’
সূত্রের খবর, এরই মধ্যে আবার সিপিএমের নেতৃত্বও ভিক্টরকে ‘বার্তা’ দিয়েছেন। তবে ভিক্টর ছিলেন ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সিপিএমের নিয়ম অনুযায়ী দলে যোগ দিয়েই সেই সাংগঠনিক ‘গুরুত্ব’ পাওয়া সম্ভব নয়। ভিক্টরও এই বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখাননি বলেই বাম সূত্রের খবর।
শেষ পর্যন্ত কোন পথে যাবেন? ভিক্টর বলছেন, ‘‘একাধিক দলের সঙ্গেই আলোচনা হয়েছে। চাকুলিয়ায় আমার রাজনীতির যে জমি, তার ক্ষতি করে কিছু করতে চাই না। আমার কথা ওঁদের বলেছি, ওঁরাও ওঁদের বক্তব্য জানিয়েছেন। চূড়ান্ত কিছু এখনও ঠিক হয়নি।’’ কেউ কেউ ভিক্টরকে পরামর্শ দিচ্ছেন আরও একটু সময় নিয়ে মত ‘চূড়ান্ত’ করতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy