রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র।
লম্বা ছুটি বুধবার শেষ হওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার তাঁর খোঁজে ভবানী ভবনে গিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু রাজ্যের গোয়েন্দা-প্রধান রাজীব কুমারকে সেখানে পাওয়া যায়নি। তাঁর ছুটি বাড়ানো হয়েছে কি না, শুক্রবার পর্যন্ত কাটেনি সেই ধোঁয়াশাও। ফের রাজীবের ছুটি মঞ্জুর হয়েছে, এমন কোনও বার্তা রাজ্য সরকার তাদের পাঠায়নি বলে জানায় সিবিআই।
তবে নবান্নের খবর, ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত রাজীবের ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। কিন্তু সরকারের কোনও শীর্ষ কর্তা এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। যাঁর বলার কথা, রাজ্য পুলিশের সেই ডিজি বীরেন্দ্র ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি। রাজীবের আবেদন মেনে ফের তাঁর ছুটি মঞ্জুর করা হলে সেটা সিবিআই-কেও জানানোর কথা। ছুটি মঞ্জুর হয়ে থাকলে সিবিআই-কে তা জানানো হল না কেন, বীরেন্দ্রের কাছ থেকে এই প্রশ্নেরও কোনও জবাব আসেনি।
২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়েছিলেন রাজীব। তার পরে ছুটি বাড়ানোর আবেদন করেন। তা খারিজ হলে ২৬ তারিখ, বৃহস্পতিবার তাঁর কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে-দিন তিনি ভবানী ভবনে যাননি। কাজে যোগ দিচ্ছেন বলে সরকারকেও জানাননি। কাজে যোগ না-দেওয়ায় রাজীবকে সরকারি ভাবে ‘অনুপস্থিত’ দেখানো হয়েছে কি না, প্রশ্ন তুলছেন পুলিশ অফিসারদেরই একাংশ।
নিম্ন আদালতে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পরে আবার একই আর্জি জানানো হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। তার শুনানি চলছে এখনও। বিচারপতি সহিদুল্লা মুনশি ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিনেও দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেছে। সোমবার ফের শুনানি হওয়ার কথা।
রাজীব প্রথমে ২৮ অগস্ট মেল করে সিবিআই-কে জানিয়েছিলেন, তিনি ৯ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ছুটিতে থাকবেন। সম্ভাব্য গ্রেফতারি এড়াতে রক্ষাকবচ চেয়ে রাজীব হাইকোর্টে যে-মামলা করেছিলেন, তখনও সেটি চলছিল। সরকারের কাছেও ওই ছুটির আবেদন করেন তিনি। ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রক্ষাকবচ তুলে নেওয়ার পরে রাজীবকে গ্রেফতার করতে চায় সিবিআই। সরকারি ভাবে তিনি তখন ছুটিতে। রাজীব রাজ্যকে জানান, তিনি ছুটিতে কলকাতায় সরকারি বাসভবন, ৩৪ নম্বর পার্ক স্ট্রিটেই থাকবেন। কিন্তু বিপদের আঁচ পেয়ে বেপাত্তা হয়ে যান গোয়েন্দা-প্রধান। সিবিআই তাঁকে খুঁজতে শুরু করে। এবং সেই লুকোচুরি খেলা এখনও অব্যাহত।
রাজীবকে তাদের সামনে হাজির করানোর জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি-কে চিঠি লিখে অনুরোধ করে সিবিআই। সরকারের তরফেও রাজীবের বাসভবনে নোটিস পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও রাজীবের সাড়া পাওয়া যায়নি। এক সিবিআই-কর্তা তখন বলেছিলেন, ‘‘কত দিন লুকিয়ে থাকবেন? ২৫ তারিখ ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাঁকে কাজে যোগ দিতেই হবে।’’ তখন খবর আসে, রাজীব সেই ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন। সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য ছুটির মেয়াদ বাড়ালে তা সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা বলে ধরে নেওয়া হবে। কারণ, সিবিআই এই তদন্ত চালাচ্ছে শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই।
নিম্ন আদালতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজীবের আগাম জামিনের আবেদনের ফয়সালা হয়ে গেলেও হাইকোর্টে সেই আর্জির শুনানি এ দিনেও শেষ হয়নি। বুধবার থেকে রুদ্ধদ্বার কক্ষে (‘ইন ক্যামেরা’) শুনানি চলছে। বৃহস্পতিবার বেলা সওয়া ১টা পর্যন্ত রাজীবের আইনজীবী সওয়াল করে জানিয়ে দেন, তাঁর বক্তব্য শেষ। সে-দিন দুপুরে সওয়াল শুরু করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তিনি সওয়াল করেন। সোমবার সকালে সিবিআইয়ের আইনজীবী ফের সওয়াল করবেন বলে আদালত সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy