Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Schools

School Timing: নতুন সময়সূচি নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ বহু জেলায়

পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক পড়ুয়াই বাড়িতে স্মার্টফোন না থাকায় বা নেটওয়ার্ক সমস্যায় নতুন সময়সূচি জানতে পারেনি।

বাড়ি ফেরা: স্কুল ছুটির পরে একসঙ্গে। সোমবার উলুবেড়িয়ায়।

বাড়ি ফেরা: স্কুল ছুটির পরে একসঙ্গে। সোমবার উলুবেড়িয়ায়। ছবি— সুব্রত জানা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৫৬
Share: Save:

শিক্ষা দফতরের দেওয়া স্কুল-নির্ঘণ্টের নতুন নির্দেশিকা রাজ্যের সর্বত্র সময়ে জানতে পারেনি পড়ুয়ারা। ফলে, সোমবার এমন অনেকেই (নবম, একাদশ শ্রেণির) স্কুলে পৌঁছল, যাদের এ দিন ক্লাস ছিল না। তুলনায় দেরিতে ক্লাস শুরু হওয়ায়, পড়ুয়ার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে বলে দাবি কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের। তবে এখনও উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা, বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় স্কুলে আসা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কম। পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে অভিভাবক, পড়ুয়াদের বোঝানোর রাস্তায় হাঁটতে চাইছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক পড়ুয়াই বাড়িতে স্মার্টফোন না থাকায় বা নেটওয়ার্ক সমস্যায় নতুন সময়সূচি জানতে পারেনি। গোয়ালতোড়ের বুলানপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ন’জন ও একাদশ শ্রেণির ছ’জন পড়ুয়া এ দিন স্কুলে পৌঁছয়। প্রধান শিক্ষক অলোককুমার পাল বলেন, ‘‘ওদের ফেরানো হয়নি।’’ গোয়ালতোড়ের ধামচা ছাগুলিয়া সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলেও কিছু পড়ুয়া পৌঁছয়। তাদের নতুন নিয়ম বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। একই ছবি ছিল বীরভূমের বহু স্কুলেও। বোলপুর গার্লস হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ভাস্বতী লাহার বক্তব্য, “স্কুলে সময় বদল, ক্লাসের দিন ভাগে সকলের সুবিধে। তবে নির্দেশিকা আগে পেলে, সুবিধা হত।”

উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু স্কুলেও সোমবার নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা হাজির হয়। স্কুলে আসার নতুন নির্দেশিকা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। স্কুলগুলি থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন সময়সূচি জানানো হলেও, তা অনেকের কাছে পৌঁছয়নি বলে দাবি। মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতির মন্তব্য, “রবিবার অনেক দেরিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নতুন নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। ফলে, অনেকের কাছে বিষয়টা বিভ্রান্তিকর মনে হয়েছে।” উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জের বিদ্যাচক্র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দত্তের দাবি, “সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে পড়ুয়াদের নতুন নিয়মে জানানো হয়েছে। তার পরেও অনেকে এ দিন স্কুলে চলে আসে।” হবিবপুরের আইহো হাইস্কুলের তরফে মাইকে নতুন নির্দেশিকার কথা প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু স্কুলে হাজির হয় নবম, একাদশের কিছু পড়ুয়া।

হাওড়ার হাই মাদ্রাসাগুলিতে পুরনো নিয়মেই ক্লাস হয়েছে। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকদের দাবি, নয়া নির্দেশিকা এ দিন বিকেলে হাতে এসেছে। তবে জেলার বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি বেড়েছে। শ্যামপুরের শশাটি অবিনাশ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ২১৭ জনের মধ্যে হাজির ছিল ১৭৪। দ্বাদশের হাজিরাও অর্ধেকের বেশি। প্রধান শিক্ষক রাজেশ দেরিয়ার বক্তব্য, স্কুল শুরুর সময় পিছিয়ে ১০টা ৫০ হওয়ায় হাজিরা বেড়েছে। আগের নির্দেশিকা অনুযায়ী এ দিন পশ্চিম বর্ধমান জেলার স্কুলগুলিতে উপস্থিতি প্রায় চার শতাংশ বেড়েছে।

নতুন নিয়ম মানতে এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের স্কুলগুলিতেও তেমন সমস্যা হয়নি। পাশাপাশি, যে সব স্কুলে পর্যাপ্ত ক্লাসঘর এবং শিক্ষক রয়েছে, সেখানে যাতে রোজই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস করা যায়, তেমন পরিকল্পনাও করছেন সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ। কাঁথির নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বসন্তকুমার ঘোড়ইয়ের কথায়, ‘‘অভিভাবকেরা চাইছেন, সিলেবাস শেষ হোক। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে রোজ ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ হুগলির বৈদ্যবাটী বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক প্রিয়রঞ্জন ঘটকও বলেন, ‘‘প্রয়োজনে, পড়ুয়াদের স্কুলে থাকার সময় কমানো হোক। কিন্তু প্রতিদিন ক্লাস হওয়া জরুরি।’’

স্কুল খোলার পরে, প্রথম সপ্তাহে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার নানা স্কুলে উপস্থিতির হার ছিল অনেকটাই কম। বাঁকুড়ার শহরাঞ্চলের নানা স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ছেলেমেয়েদের পাঠাচ্ছেন না কিছু অভিভাবক। গ্রামীণ এলাকায় অনেক পড়ুয়া পরিবারের সঙ্গে ধান কাটার কাজে হাত লাগানোয় স্কুলে আসছে না। এই পরিস্থিতিতে এখনও স্কুলমুখী হয়নি এমন পড়ুয়াদের চিহ্নিত করে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করে, বুঝিয়ে স্কুলে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy