Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

চাঁদা তুলে লড়াই, উল্টো হাওয়া কর্মচারী সংগঠনে

এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের (স্যাট) রায় ঘোষণার পরে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে আলোচনার কেন্দ্রে ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়’।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৮
Share: Save:

মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলা চলেছে প্রায় তিন বছর ধরে। শুনানি হয়েছে মোট ৬২টি। মামলা লড়তে খরচ হয়েছে ১৩ লক্ষ টাকারও বেশি। সংগঠনের টাকা, নিজেদের গাঁটের কড়ি তো গিয়েছে, এমনকি চাঁদা তুলে সেই খরচ জুগিয়েছেন মামলাকারীরা। এর পাশাপাশি ছিল বিরোধী কর্মচারী সংগঠনের সদস্যদের নির্বিচারে বদলি হওয়ার সমস্যাও।

এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের (স্যাট) রায় ঘোষণার পরে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে আলোচনার কেন্দ্রে ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়’। রায় নিয়ে শাসক দলের অন্দরে শুরু হয়েছে আত্মসমালোচনা। শাসক দলের সরকারি কর্মী ইউনিয়নের প্রবীণ নেতারা অনেকেই মনে করছেন, লড়াইয়ে না ফিরলে প্রাসঙ্গিকতা হারাবে তাঁদের সংগঠন।

কেন্দ্রীয় হারে এবং অন্য রাজ্যে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মীদের মতো মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার দাবিতে ২০১৬ সালের নভেম্বরে মামলা করেছিল ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়’। পুরোভাগে ছিলেন সংগঠনের দুই নেতা মলয় মুখোপাধ্যায় এবং শ্যামল মিত্র। প্রশাসনিক সমস্যা ও অর্থাভাব থাকলেও আন্দোলনকে ধরে রেখেছিলেন তাঁরা। একদা বাম সরকারের উপরে সরকারি কর্মীদের দাবি নিয়ে চাপ তৈরি করত কো-অর্ডিনেশন কমিটি। কিন্তু শাসক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশন কর্মীদের দাবি আদায়ে সক্রিয় হতে পারেনি বলে আত্মসমালোচনা করছেন সংগঠনের প্রবীণ নেতাদের অনেকে। জনমত এবং জনপ্রিয়তা তৈরির প্রশ্নে কংগ্রেস প্রভাবিত কনফেডারেশন অন্য কর্মী সংগঠনগুলিকে পিছনে ফেলেছে বলেও মনে করছেন তাঁরা।

শাসক দলের কর্মচারী সংগঠনের মেন্টর গ্রুপের নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন মলয়। অথচ আমাদের সংগঠন সরকারের কাছে দাবিদাওয়া তুলে ধরতেই পারল না। এ ভাবে চললে সংগঠন জনপ্রিয়তা এবং কর্মীদের আস্থা হারাবে।’’

কী ভাবে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন মলয়বাবুরা?

কনফেডারেশন নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, আন্দোলন করার অধিকারই একটা সময় কেড়ে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সময় থেকে নির্ধারিত কর্মসূচি বাবদ খরচের টাকা জমানো হতে থাকে সংগঠনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তার উপরে জমছিল সদস্যদের চাঁদা। পরবর্তীতে সেই সংগ্রহও কমে যায়। জমানো টাকা দিয়ে তিন বছর ধরে স্যাট এবং কলকাতা হাইকোর্টে ৬২টি শুনানি চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। সেই কারণে মামলা চলার ফাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে আর্থিক সহযোগিতার আবেদন জানাতে হয়েছিল।

রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের কথায়, ‘‘আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিল স্যাট। গত আট বছর মুখ্যমন্ত্রী কথা বললেন না, আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হতে হল। বদলিও হতে হয়েছে। মিথ্যা মামলাও দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের বৈঠকে ডাকছেন তিনি। এ বার আন্দোলন আরও বাড়বে।’’

প্রশাসনের অনেকে অবশ্য বলছেন, রাজ্য সরকার স্যাটের রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে যেতে পারে। আত্মবিশ্বাসী মলয়বাবু বলছেন, ‘‘পরবর্তী আইনি লড়াইয়ের জন্য আমরা প্রস্তুত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

DA TMC SAT Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy