—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক পরেই আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তার পরে সম্প্রতি ফের হামলা হয় হুগলির চণ্ডীতলা-১ ব্লকের কুমিরমোড়া পঞ্চায়েতের মাঝেরহাটের মহিলা বিজেপি কর্মী শাকিলা বেগমের বাড়িতে। এ বারে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে তাঁর উপর অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের লোকদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনার পিছনে পরিবারিক বিবাদের দাবি করেন। থানার আধিকারিকদের একাংশেরও এমনই অভিমত।
শাকিলা বেগম এখন শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শরীরের নানা অংশ পুড়ে গিয়েছে বছর পঞ্চাশের ওই মহিলার। আগের দু’দফা হামলার পরে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্তদের টিকি ছুঁতে পারেনি পুলিশ। এ বারে হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছেন, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী ধরনের অ্যাসিড ছোড়া হয়েছিল, সেই অ্যাসিড কতটা সহজলভ্য এবং হামলাকারীদের হাতে তা এল কী করে, এই প্রশ্নও উঠছে। তদন্তে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন। আগের দু’টি ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ পুলিশ মানেনি।
পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় প্রার্থীর এজেন্ট হয়েছিলেন শাকিলা। বিজেপি করার ‘অপরাধে’ই তাঁর উপরে বারবার আক্রমণ, দাবি পরিবারের। তাঁরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়ির সদর দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন শাকিলা। অভিযোগ, সেই সময় ৪-৫ জন হেঁটে এসে বোতল থেকে অ্যাসিড ছুড়ে দেয়। শাকিলার হাতে, পায়ে, পেটে অ্যাসিড লাগে। শাড়ির কিছুটা অংশ পুড়ে যায়। যন্ত্রণায় তিনি ছটফট করতে থাকেন। হামলাকারীরা হেঁটেই চলে যায় বলে পরিবারের দাবি।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। মহিলার আত্মীয়েরা জানান, তাঁর চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এফআইআর করা হয়নি। করা হবে। শনিবার হাসপাতালে গিয়ে পুলিশ মহিলার বয়ান নেয়।
শাকিলার আত্মীয়দের অভিযোগ, গণনার পর দিন শাকিলা এবং তাঁর এক আত্মীয়াকে মারধর করে তৃণমূল। পোস্টার পড়ে, ‘শাকিলা হঠাও, গ্রাম বাঁচাও’। এর পরে মাস দু’য়েক পরিবারের লোকেরা ঘরছাড়া ছিলেন। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন। দিন কয়েক আগে বাড়িতে ইট ছোড়া হয় বলে দাবি। পরিবারের দাবি, পুলিশের কাছে বিচার না পেয়ে ওই ঘটনার পরে পুলিশের সামনেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন শাকিলা। পড়শিরা আটকান। এর পরে ফের শাকিলারা গ্রাম ছাড়েন। শুক্রবার সকালে বাড়ি ফেরেন। অভিযোগ, সকাল থেকেই অভিযুক্তেরা ইট ছোড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তার পরে সন্ধ্যায় ওই হামলা।
শাকিলার ছেলে শেখ আসফার আলির অভিযোগ, ‘‘মা ভোটে বিজেপির এজেন্ট হওয়ার কারণে গণনার পর দিন থেকেই বাড়িতে বার বার হামলা চালিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ ভাবে চলতে থাকলে সপরিবার আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই। এলাকায় থাকতে গেলে আমাদেরও নাকি তৃণমূল করতে হবে!’’
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক বলেন, ‘‘বিজেপি করায় এ ভাবে হামলা চালাচ্ছে তৃণমূলের বাহিনী। পুলিশ মজা দেখছে।’’ চণ্ডীতলা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মলয় খাঁয়ের দাবি, ‘‘এই ঘটনায় রাজনীতি বা তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। সম্পূর্ণ পারিবারিক বিবাদ। দীর্ঘদিন ধরে চলছে। পুলিশকে বলেছি উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy