মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
বাংলা নতুন বছরের শুরুতেই কি নতুন উৎসব পাবে বাংলা? রাজ্য সরকারের তরফে গত কয়েক দিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের জন্য তারিখের সন্ধান চলছিল। সব ঠিক থাকলে সেটা হতে চলেছে ১ বৈশাখ। এমনিতেই বৈশাখের প্রথম দিন বাঙালির কাছে উৎসব। ওই দিন যদি পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালিত হয় তাহলে জোড়া উৎসব পাবে বঙ্গবাসী।
সোমবার ১ বৈশাখ 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পালনের সুপারিশ করল 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি'। সোমবার বিধানসভায় কমিটির উপদেষ্টা তথা প্রাক্তন সাংসদ সুগত বসুর নেতৃত্বে এক বৈঠক হয়। বিধানসভা সূত্রে খবর, সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১ বৈশাখ 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পালন করা যেতে পারে। কেন এই দিনটিকে কমিটি 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' হিসেবে ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে, তা বৈঠকে ব্যাখ্যা করেছেন সুগত। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ইতিহাসকে মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ছেড়ে দিয়েছে কমিটি। বিধানসভা সূত্রে খবর, গত শুক্রবারের বৈঠকে বিভিন্ন তারিখের ব্যাপারে যুক্তি দেখিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। কেউ বলেছিলেন, ১ বৈশাখ 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হোক। কেউ আবার ২৮ মে দিনটির পক্ষে মত দিয়েছেন। কারণ, ওই দিন বিধানসভায় পাস হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব। আবার একাংশ ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' ঘোষণার পক্ষপাতী ছিল। কিন্তু সোমবারের বৈঠকে সুগতর যুক্তি মেনে নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকে ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা ও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। কমিটিতে রাখা হলেও মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগগা বৈঠকে যোগদান করেননি। রাজ্য বিজেপি ২০ জুনকে 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' হিসেবে পালন করে। কারণ, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায় ভোটাভুটিতে বাংলা ভাগের বিষয়টি স্থির হয়েছিল। বাংলাকে দু'ভাগে ভাগ করে পূর্ব পাকিস্তানের জন্ম হয়। পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্তি ঘটে ভারতে। যার কৃতিত্ব বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে জনসঙঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেয়। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার পৃথক 'পশ্চিমবঙ্গ দিবসে'র ঘোষণা করে পাল্টা চাল দিতে চায়।
অন্য দিকে, গত ২০ জুন রাজভবনে 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পালন করেছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কিন্তু এই দিনটিকে 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' হিসেবে মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে ফোনে অনুরোধ জানিয়ে ও পরে চিঠি লিখে রাজ্যপালকে এই আয়োজন থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের অবস্থানে অনড় থেকে রাজভবনে 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পালন করেন আনন্দ বোস। তাই এ বার পাল্টা 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' ঘোষণার মাধ্যমে বিজেপি ও রাজভবনকে জবাব দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাই মনে করছেন বাংলার রাজনীতির কারবারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy