বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে ওই দলে ১১ জন রয়েছেন। তাঁরাই তদন্ত করছেন। তার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, বড়বাজারের মেছুয়ার ফলপট্টির ওই হোটেলে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল, যার জেরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে এবং আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণাও করেছেন তিনি।
বুধবার, অক্ষয়তৃতীয়ায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে দিঘায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর তিনি নজর রাখছিলেন। অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বুধবার সকালেই শোকপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, তিনি সারা রাত উদ্ধারকাজের খোঁজখবর নিয়েছিলেন। মমতা এ-ও বলেছেন, ‘‘সব মিলিয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে কারণ, হোটেলের ভিতরে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশ এবং দমকলের তৎপরতায় ৯৯ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর জন্য স্থানীয়দেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
নানা গাফিলতির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকার কারণেই গোটা ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন তৎপর ছিল না বলেই অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘এটা ঘটেছে, কারণ গোটা প্রশাসন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিন দিনের ছুটি কাটাতে দিঘায় চলে গিয়েছে।’’
বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ, এক মহিলা এবং দুই শিশু। পুলিশ সূত্রে খবর, ১৪ জনের মধ্যে আট জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। এই ঘটনায় আহতের সংখ্যা ১৩। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি এক জন। মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহতদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা।
কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, কী ভাবে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধবার ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দলের আসার কথাও রয়েছে। তারা পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে। কোনও গাফিলতি ছিল কি না, কেন আবাসিকদের বার করা গেল না, সব কিছু তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন বর্মা।