—ছবি সংগৃহীত
ভরা পৌষ। গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চলছে বেশ কনকনে ঠান্ডা। কিন্তু কলকাতায় শীত যেন একটু কৃপণ! আবহাওয়া দফতরের বয়ানে এটা ‘স্বাভাবিক শীত’। যদিও শীতের দাপুটে ব্যাটিংয়ের অভাব বোধ করছেন শীতপ্রত্যাশী মহানগরবাসী। হাড়কাঁপানো উত্তুরে বাতাস ফের কবে আসবে, সত্যিই ফের আসবে কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে জোরকদমে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের হিসেব, শনিবার, নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক বলেই আবহবিদেরা জানান। তাপমাত্রার লড়াইয়ে কলকাতার গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই দাঁড়িয়ে দমদম। সেখানে রাতের তাপমাত্রা নেমেছে ১৩.৩ ডিগ্রিতে। তবে রাতের তাপমাত্রা তুলনায় বেশি নেমেছে অদূরের ব্যারাকপুরে— ১০.১ ডিগ্রি। সকালের দিকে উত্তুরে হাওয়া থাকলেও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার দাপট কমেছে। বারাসতের বাসিন্দা অংশুমান সেনগুপ্তের আক্ষেপ, ‘‘স্নান করতে গিয়ে যদি কাঁপুনি না-ধরে তা হলে আর শীত কিসের!’’ তবে রাত বাড়লে শহরতলি বা মফস্সলে শীত মালুম হচ্ছে।
শীতের উপস্থিতি জোরালো রয়েছে গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতেও। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে রাতের তাপমাত্রা নেমেছে ৮.২ ডিগ্রিতে, পানাগড়ে ৮.৪। আবহবিদেরা জানান, ওই দুই জায়গায় স্বাভাবিকের থেকে অন্তত তিন ডিগ্রি নীচে রয়েছে রাতের তাপমাত্রা। পুরুলিয়ায় তা নেমে গিয়েছে ৬.৪ ডিগ্রিতে। ফলে সেখানে হাড়ে কাঁপুন ধরছে ভাল মতনই।
পিছিয়ে নেই উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও তরাই এলাকা। দার্জিলিঙে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪.৪ ডিগ্রি, কোচবিহারে ৬.৭। জলপাইগুড়িতে পারদ অবশ্য কিছুটা উপরে রয়েছে। সেখানে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৩ ডিগ্রি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে তা নেমেছে ৯.২ ডিগ্রিতে।
মৌসম ভবন সূত্রের খবর, উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু এলাকায় প্রবল শৈত্যপ্রবাহ বইছে। তবে আজ, রবিবার থেকে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। আগামী কয়েক দিনে উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণ ভাবে শীতকালে বৃষ্টির পরেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঝুপ করে নেমে যায়। আর উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা নামলে জোর বাড়ে উত্তুরে হাওয়ার। তার ফলে কনকনে ঠান্ডা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ, বিহার হয়ে গাঙ্গেয় বঙ্গে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা হাজির হয়। সেই হিসেবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শেষে ঝাঁঝালো ব্যাটিং দেখা যেতে পারে শীতের ব্যাটে।
শীতপ্রেমে মজতে চাইলে পৌষের স্লগ ওভারে, সংক্রান্তির কাছাকাছি শীতের সেই সম্ভাব্য ঝোড়ো ইনিংসের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া আপাতত আর কোনও বিকল্প উপায় নেই বাঙালির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy