উত্তরকাশীর নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকের উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করতে ডাক পড়ল কোল ইন্ডিয়ার। কয়লা মন্ত্রকের নির্দেশ পাওয়ার পরই ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন কোল ইন্ডিয়ার অধিকর্তা। ১৯৮৯ সালে রানিগঞ্জের মহাবীর কোলিয়ারিতে কয়েকশো ফুট নীচে খনিতে আটকে থাকা ৬৫ জন খনি শ্রমিককে তিন দিন পর যে ভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর জন্য ভাবা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারি সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে। সে দিন থেকে সুড়ঙ্গের ভিতরেই আটকে শ্রমিকের দলটি। তাঁদের খাবার, অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কবে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞও আনা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার ২৪০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি শ্রমিকদের। তাঁদের দ্রুত উদ্ধারের জন্য সেই কাজে সহযোগিতা করতে এ বার ডাক পড়ল ইসিএলের। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে কোল ইন্ডিয়ার একটি দল।
আসানসোলের সাঁকতোরিয়ার ইসিএলের ডিরেক্টর নীলাদ্রি রায় জানান, কোল ইন্ডিয়ার অন্যতম ডিরেক্টর অনিল কুমার রানা তাঁকে বিষয়টি জানান। শুধু তাই-ই নয়, কয়লা মন্ত্রক থেকে তাঁকে ইসিএলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে, এ কথাও ইসিএলের ডিরেক্টরকে জানান অনিল কুমার। মহাবীর কোলিয়ারিতে কী ভাবে উদ্ধারকাজ চালানো হয়েছিল, কোন ড্রিল মেশিন ব্যবহার করা হয়েছিল ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়। নীলাদ্রি বলেন, “যেহেতু বিভিন্ন খনি দুর্ঘটনায় ইসিএলের আধিকারিক থেকে কর্মীদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে, সেটিকে কাজে লাগানোর জন্য সাহায্য করতে পারি বলে কোল ইন্ডিয়াকে জানিয়েছি।” অন্য দিকে, ইসিএলের মাইন্স রেসকিউ স্টেশনের প্রাক্তন সুপারিনটেন্ডেন্ট এবং বর্তমানে ইসিএলের সদর দফতরের নিরাপত্তা বিভাগে কর্মরত আধিকারিক অপূর্ব ঠাকুর বলেন, “শুধু মহাবীর কোলিয়ারি নয়, কিছু দিন আগে যখন মেঘালয়ের এক কয়লা খনিতে জল ঢুকে প্রচুর মানুষ আটকে গিয়েছিলেন, আমাদের দফতর থেকে পাম্প নিয়ে গিয়ে আধিকারিকেরা সেই জল কমিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তাঁদের উদ্ধারে সাহায্য করেছিলেন।” অপূর্ব আরও জানান, শুধু মেঘালয় বা মহাবীর কোলিয়ারি নয়, এই ধরনের উদ্ধারকার্যে ইসিএলের মাইন্স রেসকিউ-এর কর্মী এবং আধিকারিকেরা দক্ষ এবং বিশেষজ্ঞ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালের রানিগঞ্জের মহাবীর কোলিয়ারিতে খনির ভেতরে জল ঢুকে ৬৫ জন শ্রমিক আটকে পড়েছিলেন। সেই সময় যশবন্ত সিংহ গিল নামে ইসিএলের এক ইঞ্জিনিয়ার কারখানাতে ক্যাপসুল তৈরি করেন। তার পর সেই ক্যাপসুল খনি গর্ভে নামিয়ে ৬৫ জনকে তিন দিন পর তিনি নিজে উদ্ধার করেন। নিলাদ্রি জানিয়েছেন, সেই ঘটনায় কী ভাবে ক্যাপসুল নামানো হয়েছিল খনিতে, কোন ড্রিল মেশিনে ব্যবহার করা হয়েছিল, কোথা থেকে সেই ড্রিল মেশিন আনা হয়েছিল— সব বিষয় জানতে চেয়েছিলেন কোল ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর। সেই বিশেষ ড্রিল মেশিনটি আসানসোলের যে বেসরকারি সংস্থা সরবরাহ করেছিল, তাদের সঙ্গেও কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইসিএল অধিকর্তা।
রানিগঞ্জের খনির সেই উদ্ধারকাজের ঘটনা এবং সেই উদ্ধারের নেপথ্য নায়ক যশবন্ত সিংহ গিলকে নিয়ে বলিউডে একটি ছবিও হয়েছে সম্প্রতি। নাম ‘মিশন রানিগঞ্জ’। টিনু দেশাই পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy