Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Strike

ধর্মঘটের বক্তব্য ভুল নয়, বললেন মমতা

তৃণমূল ও বিজেপির টক্করে বাম ও কংগ্রেস যে ময়দান থেকে মুছে যায়নি, তার প্রমাণ মিলেছে ধর্মঘটে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৭
Share: Save:

ধর্মঘট সমর্থন না করলেও কেন্দ্র-বিরোধী এই আন্দোলনে তাঁদের ‘নীতিগত সমর্থন’ রয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের যে সব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে শ্রমিক ও কৃষক সংগঠনগুলি প্রতিবাদ করছে, সেই বক্তব্য ভুল নয়। বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে রাজ্যে বৃহস্পতিবার ধর্মঘটে ‘সাড়া’ দেখে উজ্জীবিত বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বও। তাঁদের দাবি, তৃণমূল ও বিজেপির টক্করে বাম ও কংগ্রেস যে ময়দান থেকে মুছে যায়নি, তার প্রমাণ মিলেছে ধর্মঘটে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নবান্নে বলেন, ‘‘আমরা বন্‌ধ সমর্থন করি না। যদিও আন্দোলনের প্রতি নীতিগত সমর্থন রয়েছে। বক্তব্যটা তো ভুল নয়! কেন্দ্র কোল ইন্ডিয়া, রেল সব কিছু বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশটাকে সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে।’’ কেন্দ্রের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো দেশ চালাবেন। তিনি পুরসভার বৈঠক করছেন, কারও বাড়িতে গিয়ে রান্না করা খাবার খেয়ে ছবি তুলছেন, দেশটার যে কী অবস্থা! বেকারত্ব বাড়ছে, অর্থনীতিতে ধস নামছে। এ কথা আমি বলছি না, অর্থনীতিবিদরাই বলছেন।’’ বিজেপি বা কেন্দ্র নয়, মানুষের জন্য কাজ তাঁরাই করছেন বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীর আরও মন্তব্য, ‘‘এ কথা তারাই বলতে পারে, যারা কথা কম বলে কাজ বেশি করে। যারা তা করে না, তাদের দম তত দিনই, যত দিন ক্ষমতায় রয়েছে। তার পরে দম ফুরিয়ে যায়! কাজের কাজ আমরাই করছি।’’

কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম ও কৃষি আইন-সহ নানা ‘জন-বিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে এবং ৭ দফা দাবিতে এ দিন সাধারণ ধর্মঘট ও গ্রামীণ ধর্মঘটে ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে বলেই বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের মতো বেশ কিছু এলাকায় যেখানে এখন বাম বা কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি তেমন কিছু নয়, সেখানেও ধর্মঘটের প্রভাব চোখে পড়েছে। শিল্প ক্ষেত্র ধরে ধর্মঘটের পরিসংখ্যান দিয়ে সিটুর অনাদি সাহু, আইএনটিইউসি-র কামারুজ্জামান কামার, ইউটিইউসি-র অশোক ঘোষ, এআইসিসিটিইউ-এর বাসুদেব বসুদের দাবি, ভয়-ভীতি ও হুমকি উপেক্ষা করেই প্রতিবাদে এগিয়ে এসেছেন শ্রমজীবী ও বিপন্ন মানুষ।

ধর্মঘটের রাজনৈতিক প্রভাবকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই দেখছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘বিভিন্ন জেলায় এক হাজারেরও বেশি ধর্মঘটের সমর্থনকারী গ্রেফতার হয়েছেন, অনেক জায়গায় পুলিশের মার খেয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে আমাদের ডাকা অন্য সব ধর্মঘটের চেয়ে এ বার বেশি সাড়া পাওয়া গিয়েছে।’’ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা মানুষই বেশি করে ধর্মঘটে শামিল হয়েছেন। মোদী সরকারকে আমাদের বাধ্য করতে হবে পিছু হঠতে। আর রাজ্যে তৃণমূলের বিকল্প হতে পারবে কংগ্রেস ও বামেরাই, বিজেপি নয়!’’ একই সুর বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানেরও।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘যাদের পার্টি অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তারা বন্‌ধ ডাকতে এসেছে! বেহায়া!’’

ধর্মঘটের সমর্থনে এ দিন এন্টালি থেকে মিছিলে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীদের সঙ্গে পা মিলিয়েছিলেন কংগ্রেসের অমিতাভ চক্রবর্তী, কামারুজ্জামান এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের দীপঙ্কর ভট্টাচার্য প্রমুখ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE