সন্দেশখালিতে ইডির উপর আক্রমণের ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানকার তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে নিয়েও তিনি কিছু বলেননি। এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘তদন্ত চলছে। আমি কিছু বলব না।’’
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান এখনও নিখোঁজ। রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে অভিযান চালাতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেখানে গিয়ে তারা বিক্ষোভের মুখে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতার মার খেতে হয় ইডি আধিকারিকদের। তাঁদের হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। সেই ঘটনার পর থেকে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, হট্টগোলের মাঝে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন শাহজাহান। শুধু তা-ই নয়, ইডি দাবি করেছে, শাহজাহানই ফোন করে অনুগামীদের সে দিন বাড়ির সামনে জড়ো করিয়েছিলেন। এই হামলা ছিল পরিকল্পিত। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। ইডির উপর হামলা এবং দলীয় নেতার দেখা না-পাওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চান সাংবাদিকেরা। মমতা জানান, শাহজাহানের ঘটনা তদন্তসাপেক্ষ। তাই এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে চান না।
আরও পড়ুন:
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে শুরু থেকেই ‘অস্বস্তি’তে তৃণমূল। বিরোধী দলগুলি একযোগে এ বিষয়ে তাদের আক্রমণ করে চলেছে। আদালতেও স্বস্তি মেলেনি শাসকদলের। ইডির বিরুদ্ধে পাল্টা যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। নির্দেশ, আপাতত ইডির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে না পুলিশ। রাজ্যের কাছে চাওয়া হয়েছে কেস ডায়েরিও। তৃণমূল যদিও সন্দেশখালি এবং শাহজাহান নিয়ে প্রথম দিন থেকেই ইডির প্ররোচনার কথা বলে আসছে। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ঘটনার পরেই বলেছিলেন, “সন্দেশখালির ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু শুধু তৃণমূলকে বেইজ্জত করবে বলে বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তল্লাশির নামে প্ররোচনা দিচ্ছে।” এটি ধারাবাহিক ঘটনায় পরিণত হয়েছেন বলেও দাবি করেন কুণাল। পরে তিনি জানান, রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করে ইডি কাজ করলে এ বিষয়ে সরকারও সহযোগিতা করতে পারে। তা হলেই জেলায় এ ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় না কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের। দলের তরফে এই অবস্থান জানানো হলেও বৃহস্পতিবার দলের সর্বময় নেত্রী সন্দেশখালি নিয়ে কিছু বলতে চাইলেন না। অনেকে মনে করছেন, মমতা প্রশাসনিক গোপনীয়তা রক্ষা করতে চেয়েছেন। সেই কারণেই এ বিষয়ে মন্তব্য করলেন না।