১৫ তারিখ বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পর মমতা বিমানে জামশেদপুর যাবেন। — ফাইল ছবি।
বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পেশ হবে বাজেট। তার আগে ওই দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরেই রয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠক। বাজেট পেশ করার কথা অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের। তার পরেই বিধানসভা থেকে তিন দিনের জন্য জঙ্গলমহল সফরে রওনা হওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিন জেলায় তিনি প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন। এমনটাই জানা গিয়েছে নবান্ন সূত্রে।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে প্রত্যেক জেলায় সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার যাচ্ছেন জঙ্গলমহলে। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, প্রশাসনিক সভা করতেই তাঁর এই সফর। নবান্নের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৫ তারিখ বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পর মমতা বিমানে জামশেদপুর যাবেন। সেখান থেকে সড়কপথে পুরুলিয়া। মুখ্যমন্ত্রী ওই রাতে পুরুলিয়াতেই থাকবেন। ১৬ তারিখ পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়াতে তাঁর প্রশাসনিক সভা। ওই রাতেও পুরুলিয়াতে থাকার কথা তাঁর। ১৭ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি। এর পর ফিরে আসবেন পুরুলিয়া। সেখান থেকেই ১৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।
জঙ্গলমহল থেকে ফিরে উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। ২১ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গে যেতে পারেন তিনি। সেখান থেকে ২২ তারিখ মেঘালয়ে এক দিনের জন্য প্রচারে যেতে পারেন। তার পর ফিরে আসতে পারেন উত্তরবঙ্গে। সেখানে ফিরে এসে সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা মমতার। তবে সেই কর্মসূচি এখনও নিশ্চিত হয়নি।
অন্য দিকে, ১৬ ফেব্রুয়ারি মু্খ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের আগের দিন, পুরুলিয়ায় রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। ১৪ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া জেলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের প্রচারের জন্য নীতিযাত্রা শুরু করছে বিজেপি। পুরুলিয়া জেলার চার জায়গা থেকে শুরু হবে এই যাত্রা। পরের দিন, ১৫ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে একটি সভার মাধ্যমে শেষ হবে সেই যাত্রা। ওই সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনটাই জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
পুরুলিয়া জেলার বিজেপি সভাপতি বিবেক রাঙা বলেন, ‘‘সভায় শুভেন্দু অধিকারীর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ ওই যাত্রার মাধ্যমেই কি পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করবে বিজেপি? জবাবে বিবেক বলেন, ‘‘আমাদের আলাদা করে ভোটের প্রচার করতে হয় না। ৩৬৫ দিন আমরা সংগঠনের কাজ করি। শুধু ভোট এলেই প্রস্তুতি শুরু করি, তা নয়।’’ অন্য দিকে, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘১৬ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। তিনি পুরুলিয়াতে প্রশাসনিক জনসভা করবেন।’’ এ প্রসঙ্গে বিজেপিকে একহাত নিয়ে সৌমেন বলেন, ‘‘যাঁদের কোনও নীতি নেই, তাঁরাই নীতির কথা বলছে! হাস্যকর!’’
১৬ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরেও প্রশাসনিক সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। গত বছর ১৭ মে এই জেলায় এসে প্রশাসনিক সভা করেছিলেন তিনি। সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে খড়গপুর বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে দুই জেলার জেলা পরিষদ এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। তা ছাড়া চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছিলেন। পাঁচ মাস বাদে ফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আসছেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে বদলি করার নির্দেশিকা জারি করে নবান্ন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানিকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দায়িত্ব নিয়েছেন দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম) খুরশিদ আলি কাদরি। হঠাৎ করে কেন জেলাশাসককে বদলি করা হল, তা নিয়ে চলছে জল্পনা। যদিও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এই বদলি রুটিনমাফিক।
তবে রাজনৈতিক মহল তেমনটা মনে করছে না। গত ৪ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেশপুর যাওয়ার পথে খড়্গপুর গ্রামীণের মাতকাত গ্রামে হঠাৎ নেমে কথা বলতে শুরু করেন তিনি। সেখানে গ্রামবাসীরা অভিষেককে সামনে পেয়ে জমির পাট্টা, আবাস যোজনা, অঙ্গণওয়ারি কেন্দ্রের সমস্যা নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেন। তার কয়েক দিনের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে বদলি ঘিরে জল্পনা থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy