দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে টানাপড়েন পৌঁছেছিল কলকাতা হাই কোর্টে। গত বছর জুন মাসে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকারের শপথ-জট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ চার জনের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই মামলায় আইনজীবী বদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। যে বদলকে শুধু আইনি বা প্রশাসনিক দিকের বাইরে তৃণমূলের সর্বোচ্চ স্তরের সমীকরণের নিরিখেও দেখছেন অনেকে।
মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী হিসাবে হাই কোর্টে নথিভুক্ত ছিল সঞ্জয় বসুর নাম। কিন্তু বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের এজলাসে ফক্স অ্যান্ড মণ্ডল নামের সলিসিটর সংস্থা জানিয়েছে, মমতার বিরুদ্ধে করা রাজ্যপালের মামলায় তারা মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করবে। নথিপত্র দিয়ে সলিসিটর সংস্থার তরফে আদালতকে বলা হয়েছে, তাদের নোটিস না দিয়ে (অর্থাৎ, তাদের না জানিয়ে) আদালত যেন কোনও পদক্ষেপ না করে।
লোকসভা ভোটের সঙ্গেই বাংলায় দু’টি আসনে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়েছিল। সেই ভোটে বরাহনগর এবং ভগবানগোলা থেকে জিতেছিলেন যথাক্রমে তৃণমূলের সায়ন্তিকা এবং রায়াত। শপথ-জটিলতা নিয়ে রাজ্যপালের সমালোচনা করেছিলেন মমতা, সায়ন্তিকা, রায়াত এবং তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ওই চার জনের নামেই মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। হাই কোর্ট সূত্রের খবর, সেই মামলায় সপ্তাহ দেড়েক আগে রাজ্যপালের তরফে পৃথক একটি হলফনামা দাখিল করা হয়েছে। যদিও রাজভবনের তরফে সরকারি ভাবে এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। সূত্রের খবর, রাজভবনের সেই দৌত্যের পরেই নির্দিষ্ট এই মামলায় আইনজীবী বদলের পথে হাঁটলেন মমতা। প্রশাসনিক সূত্রে কয়েক মাস আগেই জানা গিয়েছিল, রাজ্য সরকারের আইনজীবী হিসাবে সঞ্জয়কে সরিয়ে দিয়েছে নবান্ন। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী হিসাবেও সঞ্জয়কে অপসারিত করা হয়েছে বলে খবর। তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, কেবল মমতার আইনজীবী হিসাবে খাতায়-কলমে সঞ্জয়ের নাম ছিল। বুধবার সেই বদলও সেরে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
নতুন সলিসিটর সংস্থা মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে যুক্ত হলেও রাজ্যপালের করা নির্দিষ্ট এই মামলায় সওয়াল করবেন তৃণমূল সাংসদ তথা প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ নিজেও বলেছেন, ‘‘আমি মমতাদির হয়ে শুনানিতে অংশ নেব।’’ বুধবার এজলাসে ছিলেন কল্যাণও। তবে শুনানি হয়নি। শুনানির দিনক্ষণ পরে জানানো হবে আদালতের তরফে।