প্রতীকী ছবি।
আমপান ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যে বাদাবন (ম্যানগ্রোভ) সৃজন এবং বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করলেন গাফিলতির। ইয়াস-এর হানায় পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনায় বাঁধ ভাঙা নিয়ে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলবের পাশাপাশি সেই গাফিলতির তদন্তের ‘প্রয়োজনীয়তা’র কথাও বলেছেন। সেই সঙ্গেই বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘আমপানের সময় প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছিল, সেগুলি কোথায় গেল?’’
মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের প্রসঙ্গ ছিল সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এ দিঘা এবং সুন্দরবন এলাকার ক্ষয়ক্ষতির। তিনি জানতে চেয়েছেন, এক বছর আগে ঘূর্ণিঝড় আমপানের পর সুন্দরবন জুড়ে প্রচুর ম্যানগ্রোভ লাগানো হলেও সেগুলি কোথায় গেল? অন্তত ১০ বছরের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের এ বিষয়ে দায়িত্ব দিতে হবে বলে জানান তিনি। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনায় নতুন করে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ রোপণের পাশাপাশি ভাঙন রুখতে ভেটিভার ঘাস লাগানোর কথাও তিনি বলেছেন।
২০২১-এর ২০ মে আমপান ঘূর্ণিঝড় হানার পরেও সুন্দরবন জুড়ে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্ব পেয়েছিল রাজ্য বন দফতর। ঘটনাচক্রে, সে সময় রাজ্যের বনমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে তিনি এখন বিজেপি-তে। গত মাসেই বন দফতর জানিয়েছিল, ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে পুরো রিপোর্ট এবং খরচের খতিয়ানও পেশ করা হয়েছে সরকারের কাছে। তার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
দিঘা এবং সুন্দরবনে বাঁধ মেরামতি নিয়ে গাফিলতির প্রসঙ্গও এসেছে বুধবার তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে। তাঁর প্রশ্ন, ‘ইয়াস-এ দিঘার কংক্রিটের পাথওয়ে ভেঙে গেল কেন? প্রতিবছরই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বাঁধ সারাই হচ্ছে। আবার তা ভেঙে যাচ্ছে।’’ তাঁর মতে, দিঘায় গাফিলতির জন্য প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাফিলতির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, গত বুধবার ইয়াস-হানার পরই মুখ্যমন্ত্রী মোট ১৩৪টি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
ঘটনাচক্রে, রাজ্যে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠার পর ২০১১ সালেই দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে। মাত্র দু’সপ্তাহ আগে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তৃণমূল নেতা জ্যোতির্ময় কর। অন্যদিকে, আমপান ও পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যের সেচমন্ত্রীর পদে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ২০১৯-এর জুন মাসে সৌমেন মহাপাত্রকে সরিয়ে সেচমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শুভেন্দুকে। আর আমপান-পর্বের বনমন্ত্রী রাজীব ছিলেন সেচমন্ত্রী পদে সৌমেনের পূর্বসূরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy