Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee C V Ananda Bose

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মানহানি হয়েছে, এমন কথা বলেনি আদালত: বোসের মামলা নিয়ে মমতার আইনজীবী

কলকাতা হাই কোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেয়াত হোসেন সরকার এবং কুণাল ঘোষকেও ওই মামলায় যুক্ত করা হয়।

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ২২:৪০
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই মামলার শুনানির পর মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট বলেছে, রাজ্যপাল সম্পর্কে মর্যাদাহানিকর কোনও মন্তব্য করা যাবে না। তার পর বিবৃতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু।

সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর যে যে বক্তব্যকে মানহানিকর বলে মামলা হয়েছে, সে ব্যাপারে আদালত কিছু বলেনি।’’ পাশাপাশিই স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী নিজে একজন মহিলা এবং জনপ্রতিনিধি। তিনি যদি মহিলাদের যন্ত্রণার কথা জানেন, তা হলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো তাঁর কর্তব্য। পাশাপাশিই বাক্‌স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকারের প্রসঙ্গও উল্লিখিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীর বিবৃতিতে।

কলকাতা হাই কোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেয়াত হোসেন সরকার এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকেও ওই মামলায় যুক্ত করা হয় রাজ্যপালের তরফে। মঙ্গলবার বিচারপতি কৃষ্ণ রাওয়ের এজলাসে শুনানি হয় এই মামলার। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীর দাবি অনুযায়ী, তাঁর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বেশ কিছু মন্তব্যে। ওই রকম মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত। যদি এই পর্যায়ে অন্তর্বর্তিকালীন আদেশ মঞ্জুর-না করা হয় তবে মামলাকারীর বিরুদ্ধে মানহানিকর বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টিতে উৎসাহ দেওয়া হবে। বিচারপতি রাও এর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যপাল বোস সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্য যে সব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলিকেও এই মামলায় যুক্ত করতে হবে। মঙ্গলবারের শুনানিতে তিনি বলেন, ‘‘এটা স্বীকার করতেই হবে যে মামলাকারী সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষের এক জন। তাঁর বিরুদ্ধে যে সব মন্তব্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’’ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘বাদী পক্ষ একটি প্রাথমিক মামলা করেছেন এবং এই পর্যায়ে একটি অন্তর্বর্তী আদেশ মঞ্জুর করা-না হলে সেটা বিবাদী পক্ষকে মানহানিকর বিবৃতি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার শামিল হবে। তাতে দুই পক্ষেরই সুনামের উপর প্রভাব পড়তে পারে।’’

তবে হাই কোর্ট রাজ্যপাল সম্পর্কে ‘মানহানিকর’ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কথা বললেও তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা শুরু করেন মঙ্গলবার রাত থেকে। প্রথমে এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘‘রাজভবনের এক প্রভাবশালী বাসিন্দার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনা দিল্লির হোটেল তাজ প্যালেস থেকে রাজভবন পর্যন্ত ছড়ানো। তদন্ত হোক। এটা বলায় কার আপত্তি থাকতে পারে? এটা বলেছি। আবার বলব।’’ তার পর কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র এক্সে লেখেন, ‘‘অবিশ্বাস্য! রাজ্যপাল রাজভবনে মহিলাদের যৌন হেনস্থা করবেন, তার পর সাংবিধানিক রক্ষাকবচ ব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রীকে বলবেন এ বিষয়ে চুপ থাকতে? দুঃখিত। আমরা রোজ সংবিধান দিবস উদ্‌যাপন করব। এবং আমরা বলে যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee C V Ananda Bose Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE