Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

হাইকোর্টের তীব্র তিরস্কার, পরে বদলি বিচারক

পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি স্পা-র মালিক মনোজ সাউ এবং সেখানকার মহিলা কর্মীদের বিরুদ্ধে নারী পাচার ও দেহ ব্যবসার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৪
Share: Save:

মামলাটি নারী পাচার ও দেহ ব্যবসার। তার বিচারে ‘গা-ছাড়া’ মনোভাব দেখানোয় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে তীব্র ভাবে তিরস্কৃত হলেন কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক। ভর্ৎসনা করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকারি আইনজীবী এবং মামলাটির তদন্তকারী অফিসারকেও। ওই মামলায় প্রধান অভিযুক্তের আগাম জামিনের আবেদন খারিজের সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে মুখ্য বিচারককে সতর্ক করে দিয়েছে। আর সরকারি আইনজীবীর গাফিলতি চিহ্নিত করে নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব-সহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের কাছে। তদন্তকারী অফিসার ভাস্কর মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

সোমবার ডিভিশন বেঞ্চের ওই ভর্ৎসনার পরেই কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের রেজিস্ট্রার-পদে বদলি হয়েছেন। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার ভুল শুধরে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশ আমি সর্বদাই মেনে চলি।’’

পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি স্পা-র মালিক মনোজ সাউ এবং সেখানকার মহিলা কর্মীদের বিরুদ্ধে নারী পাচার ও দেহ ব্যবসার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তমালবাবু ১৩ জুন নগর দায়রা আদালতে জানান, তদন্তকারী ভাস্করবাবুকে প্রধান অভিযুক্ত মনোজের বিরুদ্ধে জিজ্ঞাসাবাদের নোটিস পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হোক। মুখ্য বিচারক বিষয়টি নথিভুক্ত করেন। সরকারি আইনজীবী আদালতের কাছে সময় চান। তদন্তকারী অফিসার আদালতে হাজির ছিলেন না। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, মনোজকে নোটিস পাঠানোর সময় দিয়ে কার্যত আগাম জামিন নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। নারী পাচারের মামলায় সরকারি আইনজীবী তমালবাবু তদন্তকারীকে যথাযথ আইনি পরামর্শ দেননি। যা তাঁর দেওয়া উচিত ছিল।

ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, নোটিস পাঠানোর সময় দিয়ে ভুল করেছেন মুখ্য বিচারকও। বিচারক হয়ে এই ধরনের গুরুতর অপরাধের অভিযোগ পেয়ে তাঁর আরও সক্রিয় হওয়া (প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া) উচিত ছিল। নোটিস পাঠানোর সময় তিনি নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। তবে মুখ্য বিচারক পরে মনোজের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন।

আদালত জানিয়েছে, তদন্তকারী অফিসার ১৩ জুন আদালতে হাজির ছিলেন না বলে রিপোর্ট পেশ করেছেন মুখ্য বিচারক। অথচ লালবাজারের রিপোর্ট, ভাস্করবাবুকে মুখ্য বিচারক মৌখিক ভাবে ৪১এ ধারায় নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট। এই মামলায় স্পা-র কিছু মহিলা কর্মীকেও অভিযুক্তের তালিকায় আনায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

লালবাজার জানায়, ভাস্করবাবুকে ইতিমধ্যে ওই মামলার তদন্ত থেকে সরিয়ে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করার জন্য এক ডেপুটি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Human trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy