চেন্নাই থেকে কলকাতায় আসার পথে লরি থেকে চুরি গিয়েছিল ৯.৬৭ কোটি টাকার আইফোন। সেই ঘটনায় মূল চাঁঁইকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিল সিআইডি। ধৃতের নাম ইমরান খান। হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ইমরানের সঙ্গীকেও। তার নাম মহম্মদ মুস্তাফা ওরফে ভুরা। সিআইডি জানিয়েছে, ধৃত ইমরানের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গাড়ি থেকে শুরু করে কয়েক হাজার মোবাইল ফোন চুরি করার মামলা রয়েছে।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে কর্নাটকে কয়েক কোটি টাকার মোবাইল চুরির মামলায় সেখানকার চিকাবল্লাপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করে ইমরান এবং ভুরা। তার পর থেকে দু’জনে জেলে ছিল। গত রবিবার সিআইডি-র একটি দল দুই অভিযুক্তকে স্থানীয় আদালতের নির্দেশে হেফাজতে নেয়। মঙ্গলবার ট্রানজ়িট রিমান্ডে পশ্চিমবঙ্গে এনে ইমরান ও ভুরাকে পশ্চিম মেদিনীপুরের আদালতে তোলা হলে বিচারক ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান।
গোয়েন্দাদের দাবি, মোবাইল ভর্তি ট্রাকের চালককে নিজেদের কব্জায় নিয়ে ট্রাক থেকে মোবাইল লুট করে সেগুলি মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশ-সহ বাংলাদেশ, নেপালে পাচার করার দায়িত্ব ছিল ইমরানের। গুদাম থেকে ট্রাকে মাল তোলা, এর পরে বিভিন্ন জায়গায় তা পৌঁছে দেওয়া— সব জায়গাতেই তার নিজের লোক থাকত। এই ঘটনায় ইমরান এবং ভুরাকে নিয়ে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। সিআইডি-র এক কর্তা জানান, ইমরানকে জেরা করে চক্রটি দেশের বাইরে কোথায় কোথায় ফোন পাচার করেছে, তা চিহ্নিত করা হবে।
জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর হরিয়ানার একটি পরিবহণ সংস্থার তরফে চেন্নাই থেকে লরিতে কলকাতার উদ্দেশে ৯.৬৭ কোটি টাকার আইফোন পাঠানো হয়। কিন্তু অভিযোগ, মাঝরাস্তায় ওই লরিটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সংশ্লিষ্ট সংস্থার। শেষে লরিতে থাকা জিপিএস ট্র্যাক করে সংস্থাটি জানতে পারে, সেটি রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার একটি পেট্রল পাম্পে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেখে, লরিতে কেউ নেই। উধাও মোবাইল ফোনও। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও তাতে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় ঘটনার তদন্তভার সিআইডি-কে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।
তদন্তে নেমে সিআইডি জানতে পারে, কলকাতায় আসার পথে ভুবনেশ্বরের কাছে লরির কেবিন কেটে প্রায় দেড় হাজার আইফোন বার করে নেয় খালাসি এবং চালক। এর পরে ফাঁকা লরি নিয়ে ডেবরা পৌঁছে, সেটি সেখানেই ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। সিআইডি লরিচালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করার পরে এই চক্রের বাকি আট জনকে গ্রেফতার করে। যার মধ্যে রয়েছে ইমরানও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)