লরি থেকে খালাসিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। শুক্রবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
স্পিডব্রেকার বসানো হয়েছে। গতি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও আবার দুর্ঘটনা বাসন্তী হাইওয়েতে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চৌবাগায় ওই সড়কে মুখোমুখি ধাক্কা মেরে একটি বাস ও একটি লরি সোজা খালে গিয়ে পড়ে। ছ’জন গুরুতর আহত হন। অনেক বাসযাত্রী ছোটখাটো চোট পেয়েছেন। আহতদের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশি সূত্রের খবর, অন্তত ৩০ জন যাত্রী নিয়ে রাজাবাজার-বাবুরহাট রুটের বাসটি ঘটকপুকুরের দিকে যাচ্ছিল। উল্টো দিক থেকে লরিটি অন্য গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে ধাক্কা মারে বাসে।
তবে বাসটি খালে পড়ার আগে বিদ্যুৎস্তম্ভে ধাক্কা মারায় গতি কমে যায়। বাসটির সামনের দু’টি চাকা শুধু খালে গিয়ে পড়ে। ‘‘ওই ল্যাম্পপোস্টই যাত্রীদের বাঁচিয়ে দিল,’’ বলেন এক পুলিশকর্তা।
বাসের জানলা ও পিছনের কাচ ভেঙে যাত্রীদের উদ্ধার করে একটি ফাঁকা লরিতে চাপিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত লরির চালককে পরে উদ্ধার করে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সে পাঠানো হয় হাসপাতালে। তাঁর আঘাত গুরুতর। তিন খালাসি লরির ভিতরেই আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের এক জনের পা লরির ভাঙা অংশে আটকে গিয়েছিল। কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল ‘স্প্রেডার’ নামে একটি যন্ত্র দিয়ে লরি চিরে তাঁকে উদ্ধার করে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাসন্তী হাইওয়েতে যান চলাচল বন্ধ। লরিটি দুমড়েমুচড়ে খালে আধডোবা হয়ে পড়ে আছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দল লরি চিরে উদ্ধারকাজে ব্যস্ত। বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে গিয়েছে। রেকার দিয়ে দু’টি গাড়িকেই তোলার চেষ্টা চলছে। আহত অবস্থায় পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সে বসেই লরিচালক রবি যাদব বলেন, ‘‘বাসটিই আমার গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে।’’
দুর্ঘটনার জেরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন শিয়ালদহ থেকে ঘটকপুকুরগামী বাসের বহু যাত্রী। উল্টো দিকের যাত্রীদেরও একই অবস্থা। বানতলা চর্মনগরীর কর্মী শেখ হান্নান, কল্পনা মণ্ডলেরা অনেকটা হেঁটে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুর্ঘটনাস্থলে। কেউ যাবেন শ্রীরামপুর, কেউ বা শ্যামনগর। কখন বাড়ি ফিরবেন, তা নিয়ে রাত সাড়ে ৮টাতেও নিশ্চিত ছিলেন না তাঁরা।
পুলিশের একাংশ বলছে, বাসন্তী হাইওয়েতে অনেক বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। ওই সব জায়গায় আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়কটি কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পরে স্পিডব্রেকার বসানো হয়, গতি বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু সেগুলি কতটা মানা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। এ দিন দু’টি গাড়িরই গতিবেগ নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে অনেক বেশি ছিল বলে জানাচ্ছে পুলিশের একাংশ।
পুলিশকর্তাদের অনেকে জানান, ওই সড়কে নজরদারি থাকে। এ দিন কোনও ভাবে নজর এড়িয়ে বাস ও লরিটি বেপরোয়া ভাবে ছুটছিল। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল এবং ওই রাস্তায় আরও কী ভাবে ট্র্যাফিক বিধি আরোপ করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy