লঙ্কার দাম সস্তা হয়েছে।
ঝাঁঝ-ঝালের চাপা লড়াইয়ে শেষতক পিছিয়েই পড়ল ঝাল!
পেঁয়াজ নিয়ে আম আদমির চোখে জল এলেও লঙ্কায় এ বার আর ঝাল কই, বরং লঙ্কার দামে চোখে জল আসছে চাষিদের। তাঁদের দাবি, গত বছরও এ সময়ে লঙ্কা এমন হেলাফেলার আনাজ ছিল না। কিন্তু এ বার পেঁয়াজের দাপটে তার একেবারে নেতানো দশা।
পেঁয়াজ দেড়শো টাকা ছুঁলেও লঙ্কা ৪০ থেকে এই ক’দিনে নেমে এসেছে ১৫ থেকে ১২ টাকা কেজিতে। চাষিদের দাবি, ‘‘অতিরিক্ত উৎপাদন ছাড়াও লঙ্কা নিয়ে একটা ফাটকা বাজারি চলছে। ফলে দাম মিলছে না।’’
সেকথা মেনে নিয়েছেন জেলা উদ্যানপালন বিভাগের কর্তারাও। তাঁদের দাবি, বহরমপুরে ৪০ থেকে ৫০ টাকা লঙ্কার দাম হলেও ডোমকলে সেটা নেমে গিয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। লঙ্কার আঁতুরঘর বেলডাঙায় সাকুল্যে ১৮ টাকা কেজি।
আশ্বিনের ঝাঁঝালো রোদে ঝলসা রোগে নষ্ট হয়ে যায় লঙ্কা গাছ। ফলে লঙ্কার উৎপাদন এলাকায় তেমন ভাবে হয় না ডোমকল এলাকায়। কিন্তু এ বছর লঙ্কা গাছের উপযুক্ত আবহাওয়া থাকায় প্রচুর উৎপাদন হয়েছে। আর এর ফলে চাহিদার চাইতে জোগান অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। রানিনগর কল্যাণপুরের লঙ্কা চাষিরা এমনই দাবি করেছেন। স্থানীয় লঙ্কা চাষি গোলাম রসুল বলছেন, ‘‘অন্য বছর এই সময়ে কম করে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দাম থাকে লঙ্কার। কিন্তু এ বছর তা নেমে এসেছে ১৫ থেকে ১২ টাকায়।’’
মহকুমা উদ্যানপালন বিভাগের অধিকর্তা সঞ্জয় দত্ত বলছেন, ‘‘এক দিকে অনুকূল আবহাওয়ার জন্য যেমন লঙ্কা বেশি চাষ হয়েছে, তেমনই চাষিও আগের চেয়ে অনেকটাই সচেতন হয়েছে। উচ্চমানের বীজ ব্যবহারের ফলে উৎপাদন প্রচুর বেড়েছে।’’ বেলডাঙার লঙ্কার খ্যাতি রাজ্য জুড়ে। কৃষি দফতর জানাচ্ছে, বেলডাঙা ১ ব্লকে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে লঙ্কা চাষ হয়। বেলডাঙার বেগুনবাড়ি, সুজাপুর-কুমারপুর ও মাড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সব থেকে বেশি লঙ্কা চাষ হয়। কিন্তু এ বার সেখানেও উৎপাদন বেশি হওয়ায় লঙ্কার দর ১৭-১৮ টাকা প্রতি কেজি। বেগুনবাড়ির লঙ্কা চাষি রতন মন্ডল বলেন, “আসলে বৃষ্টিতে কিছুটা ক্ষতি হলেও লঙ্কার ফলন এ বার ভালই। তাই দাম পড়েছে কিলো প্রতি ১৫-১৮ টাকায়।’’
ফলন ভাল হওয়াতেই যে দাম মার খাচ্ছে, তা মেনে নিয়েছে কৃষি দফতরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy