ছোটদের স্কুল খোলার চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছোটদের স্কুল খোলার চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ৫০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে ছোটদের স্কুল খোলা হতে পারে। তবে কোভিড পরিস্থিতি বুঝে ছোটদের স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিস্থিতি বুঝে রোটেশনে স্কুল খোলা হতে পারে। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনাও করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই রোটেশন পদ্ধতিতে ছোটদের ক্লাস শুরুর ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরের শিশু চিকিৎসকেরা।
করোনা সংক্রমণের স্ফীতি হওয়ায় স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বড়দের স্কুল খুললেও ছোটদের স্কুল এখনও খোলেনি। যে হেতু সংক্রমণ এই মুহূর্তে অনেকটাই কম, তাই স্কুল চালু করার এই ভাবনাকে সঠিক বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার ৪.৪১ শতাংশ। ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি যা ছিল প্রায় ৩০ শতাংশ। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, করোনা আগের থেকে কমেছে। ছোটদের স্কুলে পাঠানোর এটাই আদর্শ সময়। বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ পাল বলেন, ‘‘জানুয়ারি মাসে এই হাসপাতালে আসা ২৬ থেকে ৩০ শতাংশ শিশু করোনা পজিটিভ হত। এখন সেটা কমে ১ থেকে ২ শতাংশ হয়েছে। শুরু থেকে দেখলে বোঝা যায়, করোনা কখনও বাড়ছে কখনও কমছে। এখন কমের দিকে রয়েছে। তাই ছোটদের স্কুল খোলার এটাই সুবর্ণ সুযোগ।’’
অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড-সহ একাধিক দেশে বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে। বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করছে। এ রাজ্যের শিশুরা কেন সে সব থেকে বঞ্চিত হবে! শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষের মতে, ‘‘ছোটদের স্কুল খুলে দেওয়া উচিত। আমাদের রাজ্য করোনা মোকাবিলায় যে সব ব্যবস্থা নিয়েছে, প্রশাসনকে তার উপর আস্থা রাখতে হবে।’’ প্রশাসনকে এ বিষয়ে অত্মবিশ্বাসী হয়ে স্কুল খোলার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। অপূর্বের মতে, ‘‘স্কুল না গিয়েও তো শিশুরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়ির বাইরে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের থেকেও তো শিশুরা করোনা আক্রান্ত হতে পারে। তেমনই স্কুলে গেলেও হয়তো অসুস্থ হওয়ার কিছু সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু স্কুলে না গিয়ে তারা অনেক কিছু শিখতে পারছে না। শুধু পাঠ্য পুস্তক মেনে পঠনপাঠন নয়, স্কুলের শৃঙ্খলা থেকে শাস্তি, সব কিছুই ছাত্র জীবনে দরকার।’’ রোটেশন পদ্ধতিতে ছোটদের স্কুল চালু করা গেলে ভালই হবে বলে অপূর্বের মত।
একটি শ্রেণির অর্ধেক পড়ুয়া নিয়ে শিশুদের পঠনপাঠন শুরু হলে দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করা যাবে বলে মনে করেন মেডিক্যাল কলেজের শিশু চিকিৎসক মিহির সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘শিশুরাও করোনা নিয়ে যথেষ্ট সচেতন।’’ স্কুলে যাওয়ার আগে মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের ব্যবহার নিয়ে তাদের বাড়িতে শিক্ষা দেওয়া দরকরার বলে মনে করেন তিনি।
রাজ্যের ৫১০টি গ্রামে ১৯ হাজারের বেশি শিশুকে নিয়ে করা এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বহু শিশু প্রাথমিক স্তরের বই পড়তে বা অঙ্ক কষতে পারছে না। অনেকে অক্ষর চিনতেও পারছে না। করোনার পরিস্থিতিতে প্রায় দু’বছর অনলাইন ক্লাসের ফলে অনেক পড়ুয়ারই মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেক পড়ুয়ার সামনে আবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অর্থনৈতিক অবস্থা। এই অবস্থায় অষ্টম শ্রেণি থেকে যেমন স্কুল চালু হয়েছে, তেমনই ছোটদের স্কুলও চালু করে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন চিকিৎসরা। নোবেলজয়ী অর্থনীতবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধায়A অবিলম্বে স্কুল খুলে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy