Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Flood Situation in West Bengal

বানভাসি দেখলেন পন্থ, পুনর্গঠনেও নির্দেশ

দামোদরের জলে সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকা ডুবেছিল। এলাকা পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আজ, সোমবার বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।

জলমগ্ন এলাকায়। ছোট নৌকায় করে বন্যা দুর্গত মানুষদের খিচুড়ি দেয়া হচ্ছে। রবিবার খানাকুলে।

জলমগ্ন এলাকায়। ছোট নৌকায় করে বন্যা দুর্গত মানুষদের খিচুড়ি দেয়া হচ্ছে। রবিবার খানাকুলে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৯
Share: Save:

জল নামতে থাকায় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। বানভাসি হুগলির আরামবাগ মহকুমা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে রবিবার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে এসে বন্যা পরবর্তী পুনর্গঠনে নির্দেশ দিয়ে গেলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তবে, এর মধ্যেও হুগলি ও হাওড়ায় চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অব্যাহত।

দামোদরের জলে সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকা ডুবেছিল। এলাকা পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। আজ, সোমবার বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। ঘাটালে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘দশ লক্ষ মানুষ বন্যা প্লাবিত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে সব রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে। জল কমলেই সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব হবে।’’ সামনে ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটির কথায় জানান, সেই দিকটাও নজরে রাখা হয়েছে।

রবিবার দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীর জল প্রাথমিক বিপদসীমার নীচে থাকলেও রূপনারায়ণ চরম বিপদসীমার উপরেই ছিল। খানাকুলের দু’টি ব্লক থেকে ধীর গতিতে জল নামছে। তবে, খানাকুল ২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত বিচ্ছিন্নই। সকালে মুখ্যসচিব পুরশুড়ায় সংক্ষিপ্ত প্রশাসনিক বৈঠক সেরে মুণ্ডেশ্বরী লাগোয়া হরাদিত্য এবং হরিণখোলায় পরিস্থিতি দেখেন। খানাকুল ১ ব্লকে কিশোরপুরের তালিত ও বন্দিপুরে দ্বারকেশ্বরে ভাঙনের এলাকা পরিদর্শন করেন। তালিতে দুর্গতদের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যসচিব। বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতিতে সরকারি সহায়তার আশ্বাস দেন। সঙ্গে ছিলেন কৃষিসচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, জেলাশাসক মুক্তা আর্য প্রমুখ।

দুপুরে মুখ্যসচিবের বৈঠকের কথা ছিল খানাকুল ১ ব্লকে। তখন ব্লক কার্যালয়ের সামনে কয়েকশো মানুষ ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। মুখ্যসচিব সেখানে যাননি। বৈঠক হয় আরামবাগে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। মুখ্যসচিব জানান, ত্রাণ-সহ প্রয়োজনীয় সব সাহায্য করা হবে। আপৎকালীন সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধীরে ধীরে মূল্যায়ন করে বাকি সব করা হবে। জল নামলেই নদ-নদীর ভাঙা বাঁধের কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরকে। ত্রাণের অভিযোগ নিয়ে তাঁর দাবি, দুর্গতেরা তাঁকে জানিয়েছেন খাবার, জলের ব্যবস্থা আছে। চিকিৎসা পরিষেবাও চলছে।

জল নামতেই রাস্তা সংস্কার শুরু হয়েছে জানিয়ে পূর্ত দফতরের এক জেলা কর্তা বলেন, ‘‘পুজোর আগে রাস্তা যথাসম্ভব যাতায়াতযোগ্য করার ব্যাপারে মুখ্যসচিব জোর দিয়েছেন।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, খানাকুলের দুই ব্লকে প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রামীণ জলপ্রকল্প দ্রুত সচলের ব্যবস্থা করতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বলেন মুখ্যসচিব। পরবর্তী চাষ হিসাবে ডালশস্য, বাদাম ইত্যাদির বীজ চাষিদের বিনামূল্যে দেওয়ার সুপারিশ করে জেলা কৃষি দফতর। তাতে সায় দিয়ে মুখ্যসচিব চাষিদের বিমা বাবদ ক্ষতিপূরণের জন্য পর্যালোচনার নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য দফতরের শিবিরের উপরেও জোর দেন।

ঘাটালে নৌকায় পরিদর্শনের পাশাপাশি ত্রাণ বিলি করেন মুখ্যসচিব। পরে স্বাস্থ্যসচিব, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সচিব থেকে জেলাশাসক, প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠকও করেন।

নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ঘাটাল ছাড়াও এ দিন পাঁশকুড়ায় যান তৃণমূল সাংসদ দেব। ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে ঘাটালে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের হাত ধরেই মাস্টার প্ল্যান হবে। প্রকল্পটি এমন যে, চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে। প্রাথমিক পযার্য়ের কাজ শুরু হয়েছে। জানুয়ারি থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ পাঁশকুড়ায় তিনি এর পাশাপাশি প্রশ্ন, ‘‘শুধু রাজ্য কেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের দায়িত্ব নেবে? এটা তো কেন্দ্রীয় সরকারেরও দায়িত্ব।’’ তার পরে শুভেন্দু অধিকারীর নাম করে বলেন, ‘‘আসুন ‘অধিকারী ব্রাদার্স’ মিলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানটা করি, তা হলে ভাল বার্তা যাবে।’’ জবাবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, “ছাপ্পা মেরে সাংসদ হয়েছেন। গ্রামে ঢুকলেন না কেন? ওঁকে বলব রাজধর্ম পালন করুন, প্রতিটা পঞ্চায়েতে যান।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আসলে রবিবার শুটিং ছিল না, তাই শুটিং করতে এসেছিলেন।”

ঘাটালে বন্যার্তদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন দেব। পাঁশকুড়ায় কর্মসূচিতে ছিল প্রশাসনিক বৈঠক এবং মঙ্গলদ্বারিতে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন। প্রশাসনিক বৈঠক সেরেই অবশ্য দেব ফিরে যান। এ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, এলাকায় গিয়ে ছবি তোলার থেকে প্রশাসনিক কাজের তদারকি তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Situation Manoj Pant flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy