তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যে বিতর্কের পর কুড়মি সম্প্রদায়ের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতির কুড়মি নেতাদের নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তাঁর মুখ ফস্কে বলা কথা অথবা বলা কথা বিকৃত করার জন্যও যদি কুড়মিরা অপমানিত বোধ করেন তার জন্য তিনি ক্ষমা চাইছেন।
সম্প্রতি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামে বার বার কুড়মি আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে। একগুচ্ছ দাবি নিয়ে রেল এবং সড়কপথ অবরোধ করছেন কুড়মিরা। এ নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির একটি মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়। তফসিলি জনজাতির শংসাপত্রের দাবিতে আন্দোলনকারী কুড়মি নেতাদের সঙ্গে তিনি খলিস্তানপন্থীদের তুলনা টানেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তার পরেই বিবৃতি দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, তৃণমূল নেতা অজিতকে তিনি নিজে ফোন করেছিলেন এ নিয়ে। মমতার কথায়, ‘‘অজিতকে ফোন করেছিলাম। ও বলল, এটা আমার খুব খারাপ লেগেছে। আসলে আমি বলতে চেয়েছি অন্য ভাবে। ওরা বলেছে অন্য ভাবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমরা আদিবাসীদের পাট্টা নিয়ে আইন করে দিয়েছি। ওঁরা আমার ঘরের ভাইবোন। যাঁরা মাহাতো, কুড়মি, তাঁদেরও আমরা ভালবাসি। তাঁদের দাবি মতো আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও লিখেছি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘অজিত মাইতি যদি কিছু বলে থাকেন অথবা, তাঁর বক্তব্যকে যদি বিকৃত করে থাকে বিজেপি, সেটা আমাদের বক্তব্য নয়। আমরা কুড়মিদের ভালবাসি। যথাযোগ্য সম্মান করি। যদি কেউ মুখ ফস্কে কিছু বলে থাকেন কেউ এবং তাতে যদি মাহাতোরা দুঃখ পেয়ে থাকেন, আমি নিজে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’ করজোড়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি আপনাদের সবার সঙ্গে আছি।’’
শনিবার একটি সভায় অজিত বলেন, ‘‘কুড়মি ভাইদের নিয়ে একটা নোংরা খেলা চলছে। কারণ কুড়মি ভাইদের উন্নয়ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করেছেন। সে দিন শালবনিতে কুড়মি ভাইদের নিয়ে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে এবং অন্যায় দাবি তোলা হয়েছে। আমরা কুড়মি ভাইদের বিপক্ষে নই। কিন্তু কিছু স্বঘোষিত কুড়মি নেতা স্বঘোষিত খালিস্তানি নেতার মতো ভুল বুঝিয়ে তফসিলি শংসাপত্র চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কিন্তু সেই শংসাপত্র দেওয়ার মালিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন। সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি।’’
অজিতের এই মন্তব্যের কড়া জবাব দেন কুড়মি সংগঠনের নেতারা। কুড়মি সমাজের নেতা বিপ্লব মাহাতো বলেন, ‘‘কেউ বলছেন খালিস্তানি। কেউ আবার বলছেন পিছনে অন্য কোনও রাজনৈতিক দল রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। কুড়মি সমাজ চাইছে তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ হোক। তাই নিজের দেওয়াল নিজের অধিকার।’’ পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘‘হকের দাবিতে লড়াই করলে কেন শাসকের রোষে পড়তে হবে?’’ এ নিয়ে এ বার মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy