Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
21st July TMC Rally

তৃণমূলের পদ পেয়েছিলেন চার বছর আগে, এত দিনে ২১ জুলাইয়ের সভায় ডাক পেলেন ছত্রধর

দলের রাজ্য কার্যালয় থেকে ছত্রধরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশে বছরখানেক ছত্রধর এলাকায় ঢুকতে পারেননি।

Chhatradhar Mahato

একুশে জুলাইয়ের সভায় আমন্ত্রিত ছত্রধর মাহাতো। —ফাইল চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৪ ০৪:৪৮
Share: Save:

বাম আমলে মাওবাদী-পর্ব থেকেই তিনি তৃণমূলে আছেন— এই দাবি করেছিলেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের পদ পেয়েছিলেন, তা-ও চার বছর আগে। তবে এত দিনে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে ডাক পেলেন
ছত্রধর মাহাতো।

সূত্রের খবর, দলের রাজ্য কার্যালয় থেকে ছত্রধরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশে বছরখানেক ছত্রধর এলাকায় ঢুকতে পারেননি। আইনি গেরোয় তিনি ঝাড়গ্রামের পাশাপাশি, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও ঢুকতে পারবেন না। এখন কলকাতাতেই থাকেন ছত্রধর। শনিবার ফোনে ছত্রধর বললেন, ‘‘সমাবেশে যেতে কয়েক বার ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নির্দিষ্ট স্থান থেকে আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করতে বলেছে।’’ যাবেন তো? আর কথা বাড়াননি ছত্রধর। তবে তৃণমূলের এক সূত্রে দাবি, তাঁর যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

দু’টি পর্যায়ে দীর্ঘ ১২ বছর জেলবন্দি থাকার কারণে আগে কখনও ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার সুযোগ হয়নি ছত্রধরের। তবে এমন সময়ে সেই সুযোগ হচ্ছে, যখন জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে ছায়া ফেলেছে কুড়মি ও জনজাতি বিভাজন। কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবিকে সমর্থন করছে তৃণমূলও। কিন্তু আদিবাসী-জনজাতিরা এর বিরোধিতায় সরব। সেখানে ‘কুড়মি মুখ’ ছত্রধরের ডাক পাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন অনেকে। মনে করা হচ্ছে, ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে সুনির্দিষ্ট বার্তা দিতেই ডাকা হয়েছে তাঁকে। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু অবশ্য বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব কাকে ডেকেছেন, আমার জানা নেই।’’ মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা শনিবারই কলকাতায় পৌঁছেছেন। তাঁরও বক্তব্য, ‘‘আমন্ত্রিতদের তালিকা দল তৈরি করে। এ বিষয়ে আমার কিছু
জানা নেই।’’

বাম আমলেই ২০০৯ সালে প্রথম গ্রেফতার হন তৎকালীন পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর। ইউএপিএ-সহ একাধিক রাষ্ট্রদ্রোহ, খুন, হামলা, নাশকতার মামালায় তিনি অভিযুক্ত ছিলেন। ইউএপিএ মামলায় ছত্রধরের যাবজ্জীবন সাজাও হয়। তবে ২০১৯ সালে সেই সাজার মেয়াদ কমিয়ে ১০ বছর করে হাই কোর্ট। ২০২০-তে জামিন পেয়ে তিনি লালগড়ের আমলিয়ার বাড়িতেও ফেরেন। তখনই তাঁকে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক
করা হয়েছিল।

২০২১-এর ভোট প্রচারেও ছত্রধর ছিলেন। লালগড়ে হুইল চেয়ারে বসা মমতার পাশে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেছিলেন। তবে সে বছর ২৭ মার্চ ঝাড়গ্রামে ভোট মিটতেই গভীর রাতে বাড়ি থেকে ছত্রধরকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ২০০৯ সালে ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। যদিও ছত্রধর তখন জেলবন্দি ছিলেন, তবে এনআইএ-র দাবি ছিল, জেলে বসেই তিনি ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করেছিলেন। এখনও সপ্তাহে এক দিন এনআইএ-র তদন্তকারী অফিসারের কাছে তাঁকে হাজিরা দিতে হয়। দলের সঙ্গে কার্যত প্রকাশ্যে যোগাযোগ নেই ছত্রধরের। তবে তাঁর স্ত্রী নিয়তি মাহাতো ঝাড়গ্রাম জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chhatradhar Mahato TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE