ফাইল চিত্র।
ছবিটা রাতারাতি পাল্টেছে ফেব্রুয়ারির শেষে। বছরের প্রথম দু’মাসে কোভিডের প্রভাব পড়েছিল ৪১৯জন শিশুর উপরে। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর পরে ২৫ মে-র মধ্যে এই সংখ্যাটা সাত গুণ বেড়ে ২১২৪৬ জন।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এই হিসেবে ১২ বছরের কম বয়সিদের কোভিডে মৃত্যু থেকে স্বজনবিয়োগ বা স্বজনের অসুস্থতায় অনাথ কিংবা অনাথপ্রতিম হওয়াও ধরা হয়েছে। ন’টি শিশু মারাও গিয়েছে। তবে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের মতে, রাজ্যে দেড় কোটি অনূর্ধ্ব ১৮, নাবালকের কথা ধরলে কোভিডে দুর্গতির বহর অনেক বেশি। পারিবারিক দুর্যোগে ছোটদের বেআইনি দত্তক বা পাচারের দরজা হাট করে খুলে গিয়েছে। ২০ লক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ টালমাটাল। নির্বাচন কমিশনের ‘ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তাই’ কোভিডে রাজ্যের ছোটদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে চরম দুর্গতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। তাতে প্রতিটি শিশুর মৃত্যু, অসুস্থতা, অভিভাবকের মৃত্যু বা অসুস্থতায় সঙ্কটের জন্য ক্ষতিপূরণের আর্জি জানান কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। কাল, সোমবার হাইকোর্টে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মামলাটি উঠতে পারে।তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা মুখ খুলতে চাননি।
শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, “সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যা করণীয় কিছুই করেনি নির্বাচন কমিশন। অথচ তখন ১৮ বছরের কম বয়সিদের উপরে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব তীব্র হতে পারে বলে নানা পূর্বাভাসেই আঁচ করা গিয়েছিল।” বাস্তবিক ২৩ এপ্রিল রাজ্যে কোভিডের বাড়বাড়ন্তে কলকাতা হাইকোর্ট সতর্কতামূলক নিষেধাজ্ঞা জারি করা পর্যন্ত জনসভা বা ভোট প্রচারে ভিড় রুখতে কিছুই করেনি নির্বাচন কমিশন। ৫৫ দিন ধরে ভোট প্রচার পর্বে আট দফার ভোটসূচি ঘোষণার পরেও অতিমারির বিপদ নিয়ে অনেকে সতর্ক করেন। কমিশন শোনেনি। জনস্বার্থ মামলাটিতেও বলা হয়েছে, কোভিড পরীক্ষা না-করিয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথেচ্ছ বিচরণের জন্য রাজ্যের কোণে কোণে ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের টনক নড়ার পরে পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে। ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যে অসুস্থ কোভিড রোগীর সংখ্যা ছিল ৪০০-র কম। ২৬ এপ্রিল রাজ্যে সপ্তম দফা ভোটের সময়ে তা প্রায় এক লক্ষ।
শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের মতে, ভোট পরবর্তী আংশিক লকডাউনও আগের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ফল। হাওড়ায় ১৩ বছরের পরিবার পরিত্যক্ত বালক বা উত্তর দিনাজপুরে ভ্যান চালকের ঘরে শিশু-সহ পাঁচ জনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। জেলা স্তরের নানা তথ্য কোর্টে পেশ করা হয়েছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নাবালক এবং গৃহ পরিচারিকা, দিন মজুর, ক্ষুদ্র চাষি, যৌনকর্মীদের সন্তানদের সমস্যার কথাও মামলার আর্জিতে উঠে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy