Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Panchayat Election

অশান্তির শুরু পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই

২০১৭ সালে পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরেই শুরু হয় তার তোড়জোড়। সিপিএম, নির্দলের সাত সদস্যকে দলে টানে তারা।

উত্তপ্ত কুলতলির মৈপীঠ এলাকা।

উত্তপ্ত কুলতলির মৈপীঠ এলাকা।

সমীরণ দাস ও দিলীপ নস্কর
মৈপিঠ শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০৬:২৬
Share: Save:

১৯ সদস্যের পঞ্চায়েতে দলীয় প্রতীকে মাত্র একটি আসন জিতে বোর্ড গড়েছিল তৃণমূল। ১১ আসনে জিতেও বিরোধী শিবিরে বসতে হয়েছিল এসইউসিকে।

স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের মতে, বছর দু’য়েক আগের সেই ঘটনাই মৈপিঠ-বৈকুণ্ঠপুর পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল-এসইউসির ক্রমাগত অশান্তির মূলে। তবে এই অঞ্চলে এসইউসি-র মূল লড়াই যুব তৃণমূলের সঙ্গে। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনেও যুব তৃণমূল নেতৃত্ব সক্রিয় ছিল।

কোন কৌশলে বোর্ড গড়ছিল তৃণমূল?

২০১৭ সালে পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরেই শুরু হয় তার তোড়জোড়। সিপিএম, নির্দলের সাত সদস্যকে দলে টানে তারা। দুই এসইউসি সদস্যও বোর্ড গঠনে ভোট দেন তাদের পক্ষে। সব মিলিয়ে একপক্ষ পায় ১০টি ভোট। বিপক্ষ এসইউসির হাতে ছিল ৯টি ভোট। প্রধান নির্বাচিত হন নির্দল প্রার্থী নমিতা জানা। তবে বকলমে ক্ষমতায় আসে যুব তৃণমূলই। বিরোধীদের অভিযোগ, টাকা ছড়িয়ে এবং হুমকি দিয়ে বিরোধী সদস্যদের দলে টানে যুব তৃণমূল।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই যুব তৃণমূল নেতা গণেশ মণ্ডলের নেতৃত্বে প্রভাব বাড়তে থাকে তাদের। পঞ্চায়েত ভোটে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন গণেশ। একাধিক পঞ্চায়েত দখলে আসে যুব তৃণমূলের। যার সব থেকে জোরালো উদাহরণ মৈপিঠ-বৈকুণ্ঠপুর।

তার পর থেকে এলাকায় যুব তৃণমূল এবং এসইউসি-র মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিলই। ছোটখাট লড়াই-ঝগড়া মাঝে মাঝেই ঘটে। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে শুক্র-শনিবারের ঘটনা। কিছু দিন ধরে আবার যার জমি তৈরি হচ্ছিল বলে মনে করছেন দু’দলের নেতারাই।

এসইউসি-র যে দুই জয়ী সদস্য তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে সাহায্য করেছিলেন, তাঁরা ইদানীং এসইউসি শিবিরে ফিরেছিলেন বলেই দাবি দলের। অনাস্থা প্রস্তাব আনার তোড়জোড় চালাচ্ছিল এসইউসি। এই আবহে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল।

পঞ্চায়েতের নিয়ম অনুযায়ী, বোর্ড গঠনের আড়াই বছর পর আস্থা ভোট হতে পারে। সেই মতো চলতি বছরেই আস্থা ভোট হওয়ার কথা। এসইউসির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়কৃষ্ণ হালদার বলেন, “সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে যুব তৃণমূল পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য আমাদের দিকে। আস্থাভোট হলে আমরাই জিতব। সেই ভয়েই যুব তৃণমূলের দলবল আমাদের সদস্যদের মারধর করছে, হুমকি দিচ্ছে। আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে প্রধান দুর্নীতি করেছেন। তা নিয়ে সম্প্রতি পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরা মিলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন। তার পরেই এই হামলা।”

কুলতলি ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি গণেশ মণ্ডল আবার বলেন, “ভোটের পরে সিপিএম-এসইউসি সদস্যেরা স্বেচ্ছায় দল ছেড়ে আমাদের সঙ্গে আসেন। এখনও তাঁরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। শুধু তাঁরাই নয়, গত দু’বছরে এসইউসি-সিপিএম ছেড়ে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ যুব তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আস্থা ভোট কেন, কোনও ভোটেই আর এসইউসি দাঁড়াতে পারবে না। পায়ের তলায় জমি হারিয়ে ওরা খুন-জখমের পুরনো রাজনীতি শুরু করেছে।”

এ রাজ্যে বহু রাজনৈতিক খুনোখুনির সাক্ষী কুলতলি। বাম জমানায় লড়াই ছিল এসইউসি এবং সিপিএমের মধ্যে। শুক্র-শনিবারের ঘটনা প্রমাণ করল, রাজনৈতিক হিংসার ধারা এখনও বয়ে নিয়ে চলেছে সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত এলাকা।

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Election CPM TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy