ফাইল চিত্র।
নবপর্যায়ে ১৬ নভেম্বর স্কুল আংশিক চালু করার এক মাসের মধ্যেই ক্লাসে হাজিরার ব্যবস্থা দ্বিতীয় বার বদলে ফেলার দাবি উঠল। শুরুতে নবম থেকে দ্বাদশ, চার শ্রেণির সকলকে প্রতিদিন উপস্থিত হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু হাজিরার অবস্থা দেখে দিন তিনেকের মধ্যেই স্কুল শুরুর সময় থেকে হাজিরার ব্যবস্থা বদলে ফেলতে হয়েছিল। এ বার শিক্ষক শিবিরের বড় অংশ দাবি তুলেছেন, পাঠ্যক্রম শেষ করার জন্য নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সপ্তাহে অন্তত তিন দিন স্কুলে আসার অনুমতি দেওয়া হোক। কারণ, কয়েক দিনের মধ্যেই বিভিন্ন স্কুলে একই সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু স্কুলের বক্তব্য, দশম ও দ্বাদশের টেস্টের সঙ্গে নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস করার মতো পরিকাঠামো অনেক ক্ষেত্রেই নেই। তাই টেস্টের সময় অফলাইনে নবম-একাদশের শ্রেণির ক্লাস বন্ধ করতে হবে। তার বদলে ওই দুই শ্রেণির
ছাত্রছাত্রীদের তিন দিন ক্লাস করতে দিলে তাদের পড়াশোনা কিছুটা এগোতে পারবে।
রাজ্যের শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী এখন সপ্তাহে সোম, বুধ ও শুক্রবার দশম ও দ্বাদশের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসার কথা। নবম ও একাদশের পড়ুয়াদের আসার কথা মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। অনেক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার বক্তব্য, সামনে টেস্ট। তাই বহু স্কুলে দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়ারা কম আসছে। তবু তাদের জন্য তিন দিন স্কুলে হাজিরার ব্যবস্থা চালু আছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেটার দরকার নেই। অথচ বেশি সংখ্যায় হাজির হওয়া সত্ত্বেও নবম ও একাদশের পড়ুয়ারা এখন ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে সপ্তাহে মাত্র দু’দিন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি বড় অংশের দাবি, সূচি উল্টে দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের সপ্তাহে দু’দিন এবং নবম ও একাদশের পড়ুয়াদের সপ্তাহে তিন দিন স্কুলে আসার অনুমতি দেওয়া হোক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রনীল প্রধান জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠানে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২৫০। শিক্ষক ১০ জন। টেস্ট সুষ্ঠু ভাবে চালানোর জন্য ওই ১০ জন শিক্ষককেই লাগবে। তখন নবম ও একাদশের ক্লাস নেওয়া খুবই কঠিন। ইন্দ্রনীলবাবু বলেন, ‘‘টেস্ট শুরু হবে আগামী সপ্তাহের শেষে। এখন বেশি করে নবম-একাদশের পড়ুয়াদের স্কুলে আসার অনুমতি দিলে ভাল হয়।’’
নদিয়ার একটি স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক হীরক দাস জানান, তাঁদের দশম ও দ্বাদশ মিলিয়ে অন্তত ৬০০ পড়ুয়া টেস্ট দেবে। করোনা বিধি মেনে অফলাইন টেস্ট নিতে হলে স্কুলের প্রায় সব ঘরই লাগবে। তাঁর প্রশ্ন, তা হলে নবম ও একদাশ শ্রেণির পড়ুয়ারা ওই সময় ক্লাস করবে কী ভাবে? তাঁরও বক্তব্য, নবম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস করার সুয়োগ পেলে উপকৃত হবে।
উত্তর ২৪ পরগনার চাতরার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণাংশু মিশ্র জামাচ্ছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের ভবন বড় এবং পর্যাপ্ত সংখ্যায় শিক্ষকও আছেন। তাই টেস্ট চলাকালীন নবমের ক্লাস বন্ধ রাখার দরকার নেই। একাদশের থিয়োরি ক্লাস বন্ধ থাকবে। তাদের চলবে শুধু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস।
কিছু স্কুল অবশ্য ইতিমধ্যে নিজেদের উদ্যোগেই নবম ও একাদশকে সপ্তাহে তিনদিন স্কুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সেটা যে-হেতু শিক্ষা দফতরের নির্দেশকে উপেক্ষা করেই করা হচ্ছে, তাই সেই সব স্কুল প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছে না। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘পাঠ্যক্রম শেষ করার তাগিদে শিক্ষা দফতরের নির্দেশের বাইরে গিয়ে অনেক স্কুল নিজেদের মতো করে রুটিন বানিয়ে নবম ও একাদশের পড়ুয়াদের বেশি দিন স্কুলে আসতে বলছে। শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে যদি নবম ও একাদশের ছাত্রছাত্রীদের সপ্তাহে অন্তত তিন দিন স্কুলে আসার অনুমতি দেয়, তা হলে এই লুকোচুরির দরকার হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy