প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
অতীতে পিএম কিসান, আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমার মতো নানান যোজনা পশ্চিমবঙ্গ সরকার গ্রহণ করেনি। তাদের যুক্তি, অংশীদারি থাকায় এ-সব ক্ষেত্রে রাজ্যকে খরচ করতে হবে, অথচ নাম কিনবে কেন্দ্র। এ বার অংশীদারির বোঝা হালকা করে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
বাংলার বক্তব্য, নিজের খরচে কেন্দ্রের তুলনায় তারা আরও ভাল প্রকল্প চালাচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা না-নেওয়ায় কেন্দ্র এবং বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। ভোটের আগে তার ঝাঁঝ বাড়ছে। অনেক প্রবীণ আমলা-আধিকারিক মনে করছেন, কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজি হলে অসংগঠিত বহু উৎপাদন শিল্প লকডাউনের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে, কাজ বাঁচবে বহু মানুষের। অন্যথায় দায় বর্তাবে রাজ্যেরই ঘাড়ে।
‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচির পরে কেন্দ্র এ বার অসংগঠিত অতি ক্ষুদ্র উৎপাদন ক্ষেত্রের জন্য এনেছে সহায়ক প্রকল্প (ফর্মালাইজেশন অব মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ় বা এফএমই)। তাতে ব্যবসার আধুনিকীকরণে উদ্যোক্তারা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি পাবেন। আগামী পাঁচ বছরে গোটা দেশে এই প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এতে কেন্দ্র রাজ্য খরচের অনুপাত ৬০:৪০ হলেও প্রথম বছরে প্রকল্পের পুরো বরাদ্দ দেবে কেন্দ্রই। পরবর্তী চার বছরে রাজ্যের ভাগের ৪০ শতাংশের হিসেব বাদ দিয়ে টাকা পাঠাবে তারা। রাজ্যের উপরে এক দফায় বোঝা চাপবে না।
বঙ্গে নির্দিষ্ট একটি কাঁচামালের উপরে নির্ভরশীল অসংগঠিত শিল্পের সংখ্যা প্রচুর। যেমন, রফতানি ছাড়াও আচার, জ্যাম-জেলি, আমসত্ত্বের মতো বিভিন্ন জিনিস তৈরির কাজে লাগে মালদহের আম। তেমনই রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাজু এবং হাওড়ার বেকারি শিল্প। কোনও কোনও জেলার মিষ্টির চাহিদা প্রচুর। চানাচুর, চিঁড়ে-ঝুরিভাজার মতো মুখরোচক খাবার তৈরির কেন্দ্রের সংখ্যাও বেড়েছে রাজ্যে। এগুলি তথাকথিত শিল্পের তালিকাভুক্ত না-হলেও এদের উপরে লক্ষাধিক মানুষ নির্ভরশীল। লকডাউন পর্বে এই সব ক্ষেত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুঁজির টানে ব্যবসা বন্ধ হলে বহু মানুষ কর্মহীন হবেন। তাই ‘এক জেলা-এক পণ্য’ নীতিতে এই উৎপাদন ক্ষেত্রগুলিকে প্রকল্পের আওতায় আনতে চাইছে কেন্দ্র।
রাজ্যে এমন অসংগঠিত উৎপাদন ক্ষেত্র রয়েছে কমবেশি ১৬ হাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy