Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Security System

Bengal Politics: প্রাণের সঙ্গে মানও চাই, মেয়াদ শেষেও অস্ত্রধারী সঙ্গে রাখতে মরিয়া অনেক পদ্ম-নেতা

গত ১৩ মে অনেককেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, ১৫ মে-র পরে আর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া যাবে না।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২১ ২০:৪৫
Share: Save:

নেতাদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রাজ্য বিজেপি-তে। বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আগে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া বিজেপি নেতাদের সকলের সঙ্গেই এখনও রয়ে গিয়েছেন জওয়ানরা। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনেকে তা রেখে দিতে চান। আবার নতুন করে এমন অনেক বিধায়ককেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে যাঁদের কাছে তা বোঝার মতো। আর্থিক কারণেই জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করতে তাঁরা নাজেহাল। যদিও দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে সেই বোঝা বইতে তাঁরা রাজি বলেই জানিয়েছেন। এই ‘চাওয়া’ আর ‘না চাওয়া’ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে অনেক প্রশ্ন।

বিজেপি সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিতদের অনেকেই এখনও কেন্দ্রীয় জওনাদের সঙ্গে রাখতে চাইছেন। দলের রাজ্য স্তরের এক নেতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা অনেকের কাছেই তো স্ট্যাটাস সিম্বল। কেউ কেউ তো বন্দুকধারী জওয়ান পাওয়া যাবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পরেই দলে এসেছিলেন।” ওই নেতার আরও অভিযোগ, “যেখানে কর্মীরা আক্রান্ত সেখানে তাঁরা যাচ্ছেন না। অথচ তাঁরাই বেশি করে হামলার ভয়ে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছেন। এঁদের কাছে প্রাণ রক্ষার চেয়েও মান রক্ষা বেশি জরুরি। দেখনদারির টানে অনেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়েছেন। উঠে গেলে আর প্রেস্টিজ থাকবে না।’’

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ভোটের ফল ঘোষণার পরে গত ৭ মে নবাগত বিজেপি নেতাদের একটা বড় অংশের নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ওই তালিকাভুক্তদের চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ১৫ মে পর্যন্তই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। কিন্তু এর পরেও তা রয়ে যায়। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেউ কেউ ১৬ মে থেকে নিরাপত্তা ছেড়ে দিতে রাজিও ছিলেন। তবে বেশির ভাগই ভোট পরবর্তী গোলমালে আক্রান্ত হতে পারেন আশঙ্কা প্রকাশ করে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন। শেষ পর্যন্ত সকলের জন্যই মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ মে করা হয়। তবে তার জন্য নতুন করে আর কোনও চিঠি আসেনি। আবেদন মঞ্জুরের কথা ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই মেয়াদও এ বার শেষ হওয়ার পথে। সিআইএসএফ-এর এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘ঠিক কত জনের বা কোন কোন নেতার এই সুবিধা পাওয়ার মেয়াদ ৩০ মে শেষ হয়ে যাবে সেটা নিরাপত্তার কারণেই প্রকাশ করা যাবে না। তবে সংখ্যাটা ভালই। সকলকেই ফোনে মেয়াদ শেষের দিন জানানো হয়ে গিয়েছে বলে জানি।’’

কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়া অনেকেই এ বিষয়ে এখন মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে কথা বলেছেন কলকাতার ভবানীপুর আসনে প্রার্থী হওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রথমে চাইনি। আমার উপরে কয়েক বার হামলার পরে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। এখন আমায় বলা হয়েছে, যদি বহাল রাখতে চাই তবে আবেদন করতে হবে। আমি এখনও পর্যন্ত কিছু জানাইনি।’’

বিজেপি-র সিদ্ধান্ত মতো বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে যে সব নেতা নিরাপত্তা পেতেন, তাঁদের মধ্যে যাঁরা জিতেছেন তাঁদের নিরাপত্তা বহাল থাকছে। এ ছাড়াও দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিংহ-সহ যে সব পদাধিকারীরা অনেক আগে থেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান তাঁদেরটাও বহাল থাকছে। এর সঙ্গে যাঁরা এ বার বিধায়ক হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশকেই সেই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়-সহ ৬৭ জন বিজেপি বিধায়ক বিভিন্ন ক্যাটিগরির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৫০ জনের বেশি এই প্রথমবার পেলেন।

বিধায়কদের সুরক্ষা দিতেই পরাজিত প্রার্থীদের জন্য নিযুক্ত জওয়ান অমিত শাহর দফতর তুলে নিতে চাইছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দিয়েছেন চুঁচুড়া বিধানসভা আসনে পরাজিত হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। নবাগতদের মধ্যে যাঁরা পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে মনস্থ করে ফেলেছেন তাঁরাও নিরাপত্তা ছেড়ে মুক্ত হতে চাইছেন। এমনই এক নেতা বলেন, ‘‘আমি তো ছেড়ে দিলেই বাঁচি। মাসে মাসে জওয়ানদের থাকার জন্য বাড়ি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তা ছাড়া বিজেপি-তেই তো আর থাকতে চাই না। তা হলে বিজেপি-র দেওয়া নিরাপত্তা রাখতে যাব কেন?’’

রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের মুখে অনেক প্রার্থীকেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। প্রার্থী না হয়েও অনেকে পান। সেই সময় দফায় দফায় সিআইএসএফ এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের নিরাপত্তা পেয়েছিলেন দেড়শো জনের বেশি। এর মধ্যে নবাগত ছিলেন প্রায় ৮০ জন। রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নিরাপত্তা বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। এটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিষয়। কাকে দেওয়া হবে সেটা মন্ত্রকই ঠিক করে। দলের কোনও ব্যাপার নয়। আর মাঝে মাঝেই নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়। সেখানেই ঠিক হয় কার নিরাপত্তা থাকবে, কার বাড়বে, কার কমবে বা কার একেবারেই থাকবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Security System BJP Leaders
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy