কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের নিশানায় আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মিশন দিল্লি’। —ফাইল চিত্র।
বকেয়া পাওনার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে দিল্লির যন্তর মন্তরে শুরু হবে তৃণমূলের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি। তার আগে মঙ্গলবার সকালেই আবার তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’কে আক্রমণ করল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বললেন, ‘‘দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতেই দিল্লি অভিযান করছে তৃণমূল। কিন্তু কেন্দ্র আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করলে ১০০ দিনের টাকা দেওয়া হবে না।’’
সোমবার থেকেই দিল্লিতে শুরু হয়েছে তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’ কর্মসূচি। ১০০ দিনের টাকা, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার অর্থ-সহ একাধিক বকেয়া পাওনার দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দু’দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল। সামনে থেকে যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, শুরু থেকেই এই বকেয়া আদায়ের আন্দোলনকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। নানা ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে তৃণমূলের মিশন দিল্লিকে।
সোমবার, গান্ধীজয়ন্তীর দিন, কর্মসূচির প্রথম দিনে দিল্লির রাজঘাট থেকে এক রকম তাড়া করে বার করে দেওয়া হয় তৃণমূলের আন্দোলনকারীদের। মঙ্গলবার যন্তর মন্তরের কর্মসূচির আগেও পুলিশি ঘেরাটোপে গোটা চত্বর। তৃণমূলের নেতারা বলছেন, “হকের টাকা চাইতে দিল্লি আসা সাধারণ মানুষদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি।”
সোমবারেই তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’র পাল্টা একটি কর্মসূচি করেছিল বিজেপি। দিল্লিতে ডেকে এনেছিল বঙ্গ বিজেপির সাংসদদের। দিল্লিতে অভিষেকদের ‘মিশন দিল্লি’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগেই তাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, কেন তৃণমূলের এই কর্মসূচি আদতে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘লোকদেখানো’। সুকান্ত কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনও ভুল করেনি, তা বোঝাতে সুকান্ত বলেছিলেন, ‘‘সরকার যে অর্থ বন্ধ করেছে, তার যথেষ্ট কারণ আছে। প্রথমত, বাংলায় ১০০ দিনের কাজের নামে একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে। সমীক্ষায় তা ধরাও পড়ে। কেন্দ্রের তরফে বাংলাকে বলা হয়, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তার রিপোর্ট জমা দিতে। কিন্তু সেই রিপোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকার জমা না দেওয়ায় অর্থ বন্ধ করা হয়েছে।’’
এর পরে সোমবার বিকেলে আরও একটি সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলকে ‘দুর্নীতি অস্ত্রে’ নিশানা করেন আর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ। তিনি বলেন, ‘‘সারদা-নারদা-রোজভ্যালির পরে মনরেগা (একশো দিনের কাজের প্রকল্প)-র নামেও টাকা লুট হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। দোতলা-তিন তলা বাড়ির মালিককে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হয়েছে। ৩০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে, তা হলেই ভাবুন তার মধ্যে কত টাকা লুট করেছে ওই রাজ্যের শাসকদল।’’
জবাবে তৃণমূলের তরফে মুখপাত্র কুণাল বলেছিলেন, ‘‘ভুক্তভোগীদের নিয়ে বাংলার দিল্লি অভিযান সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গভীর ছাপ ফেলেছে। তাই বিজেপি কোণঠাসা হয়ে নেতাদের দিয়ে ভুল, মিথ্যা বিবৃতি দেওয়াচ্ছে।’’
দেখা গেল মঙ্গলবার সকালেও তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’কে নিশানা করে চলেছে বিজেপি। রাজনৈতিক কাজে ওড়িশায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ। কিন্তু সেখানে গিয়েও তৃণমূলের কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। আর তার পরেই আবার ‘মিশন দিল্লি’কে নিশানা করে অনুরাগ বলেন, ‘‘বাংলার সরকারের কাছে বার বার অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চাওয়া সত্ত্বেও তারা দেয়নি। তাই বন্ধ করা হয়েছে ১০০ দিনের কাজের টাকা। বাংলার দুর্নীতিকে বাড়তে দেবে না বলেই কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy