Advertisement
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
West Bengal Ration Distribution Case

‘সুপারম্যান নয় যুক্তিবাদী হতে বলছি’, রেশন মামলায় আদালতের বিবিধ প্রশ্নের মুখেও পড়তে হল ইডিকে

রেশন মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন আনিসুর রহমান এবং আলিফ নুর। আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে ইডি বার বার ‘জ্যোতিপ্রিয়ের চিঠি’কে শিখণ্ডী করেছে। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইডি।

Central investigation agency ED faced several questions from the court in the ration case

রেশন মামলায় আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৬
Share: Save:

রেশন দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার আদালতের নানা প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এসএসকেএম থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘চিঠি’ প্রসঙ্গে বিচারকের একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন করায় বিচারককে ইডি জানায়, তারা সুপারম্যান নয়। তা শুনে পাল্টা ইডিকে ‘যুক্তিবাদী’ হওয়ার পরামর্শ দেন বিচারক।

রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন আনিসুর রহমান এবং আলিফ নুর ওরফে মুকুল রহমান। আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে ইডি বার বার ‘জ্যোতিপ্রিয়ের চিঠি’কে শিখণ্ডী করেছে। ধৃতদের জামিন মামলায় মঙ্গলবারও ইডি একই প্রসঙ্গ তুলতেই বিচারক বলেন, ‘‘গোটা মামলা এমন নথির উপর নির্ভর করে আছে যা কিনা বাজেয়াপ্তই করা হয়নি।’’ তিনি ইডিকে প্রশ্ন করেন, ‘‘এমন একটা চিঠির কথা বলা হচ্ছে যেটা আপনারা বাজেয়াপ্ত হিসাবে দেখাচ্ছেন না। কোথা থেকে চিঠি এল?’’

২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর জ্যোতিপ্রিয়কে রেশন মামলায় গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতারির পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। বেশ কয়েক দিন এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁকে রাখা হয়েছিল। ওই সময়ে ইডি একটি চিরকুট উদ্ধার করে। অভিযোগ, মেয়েকে হাসপাতালে বসে চিঠি লিখেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সেই চিঠি ইডির হাতে পৌঁছয়। তাতে টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য লেখা ছিল বলে দাবি করে ইডি। সেই চিঠি কী ভাবে ইডির হাতে এল তা নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তোলেন বিচারক।

বিচারক ইডির উদ্দেশে বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন। আদালতের নির্দেশে হাসপাতালে থাকাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল। সে সময় চিঠি পাওয়া গেলে সেটা আদালতে হস্তান্তর করা উচিত।’’ তার পরই বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘উদ্ধার হওয়া চিঠি তদন্তকারী অফিসারকে (আইও) কেন দেওয়া হল? আদালতের অনুমতি ছাড়া আইও-র হাসপাতালে যাওয়ার কথা নয়। আপনারা সোজা চিঠি বাজেয়াপ্ত করছেন।’’ বিচারক জানতে চান, ‘‘ওঁর (জ্যোতিপ্রিয়) কাছে কারা দেখা করেছিলেন সেই লগবুক বাজেয়াপ্ত করেছেন?’’ ইডি আদালতে জানায়, ওই চিঠি একটি ঘটনার বহিঃপ্রকাশ। সব কিছু চিঠিতে লেখেননি জ্যোতিপ্রিয়। কিন্তু দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত টাকা (পিওসি)-র কথা আছে।

রেশন দুর্নীতির ব্যাপ্তি নিয়েও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে ইডি। বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘এই ঘটনায় ছ’টা এফআইআর হয়েছে। কিন্তু সেখানে বড় দুর্নীতির কোনও ইঙ্গিত নেই। যদি বড় দুর্নীতি হয়, তবে উপভোক্তারা কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন? কেউ তো অনাহারে মারা যাননি।’’ ইডি জানায়, এফআইআরের পর তারা নিজের সূত্রে খবর নিয়েছে। তল্লাশি চালিয়ে সব কিছু পেয়েছে। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারক। তিনি ইডির কাছে জানতে চান, ‘‘খোঁজখবর নিয়ে যখন গরমিল দেখলেন তো সেটা সঠিক বিভাগে জানালেন না কেন?’’ ইডি আদালতে বার বার দাবি করেছে, চিঠিতে ‘মুকুল’ বলে এক জনের উল্লেখ আছে। বিচারক সেই প্রসঙ্গে জানতে চান, ‘‘মুকুলের নাম যদি থাকে তা হলে তখনই তদন্ত না করে এত দেরি করা হল কেন?’’ যা শুনে ইডির আইনজীবী বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কিছু মনে করবেন না, আমরা সুপারম্যান না।’’ বিচারকের পরামর্শ, ‘‘সুপারম্যান নন তো তা হলে হতে চাইছেন কেন? আপনাদের সুপারম্যান নয়, যুক্তিবাদী হতে বলছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Ration Distribution Case ED Jyotipriya Mallick
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy