ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্যকে সতর্ক করল কেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।
প্রায় প্রতি দিনই ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে রাজ্যে। বৃহস্পতিবারও ফের শহরে ডেঙ্গিতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেসরকারি সূত্রে দাঁড়াল ৪৮। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যকে সতর্ক করেছে বলেই সূত্রের খবর। আজ, শনিবার রাজ্যের সামগ্রিক ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যসচিব ফের পর্যালোচনা বৈঠক করতে পারেন।
জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে ডেঙ্গি সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য হাসপাতালের শয্যা ও অন্যান্য পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্লেটলেট মজুত রাখার জন্য অতিরিক্ত রক্তদান শিবিরের আয়োজনের কথাও বলা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে শুক্রবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তুলনায় আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনেক বেশি সচেতন। সে কারণে অন্যান্য রাজ্যের থেকে আমাদের রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার অনেক কম। অন্যান্য রাজ্যের থেকে আমাদের এখানে বেশি রক্তদান কর্মসূচি হয়। চিঠি দেওয়ার থেকে ময়দানে নেমে কাজ করা অনেক কঠিন।” যদিও চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ‘‘রাজ্য এতটাই সচেতন যে, ডেঙ্গির তথ্য ন্যাশনাল ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোলকে দেয়নি। অন্য রাজ্যের পরিসংখ্যান ওই কেন্দ্রীয় পোর্টালে থাকলেও, শুধু এ রাজ্যেরটাই নেই!’’
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বেলভিউয়ে মৃত্যু হয় দেব পোপাট (১৭) নামে এক কিশোরের। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা হলেও মাস সাতেক ধরে সে পরিজনের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুর এলাকার বাড়িতে থাকত। কারণ, মাস সাতেক আগে দেবের ব্রেন টিউমার অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসার সুবিধার জন্য সে ভবানীপুরে থাকত। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরের জ্বর আসে। পরের দিন পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। যে হাসপাতালে মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সেখানেই ভর্তি করানো হয় ওই কিশোরকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, তাকে গত ২০ সেপ্টেম্বর বেলভিউয়ে ভর্তি করানো হয়। ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রাখা হয়েছিল ওই কিশোরকে। ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি শকের উল্লেখ রয়েছে।
৭০ নম্বর ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি অসীম বসু বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে তিন দিন আগে পর্যন্ত তিন জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিল। এখনও পর্যন্ত আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণেই আছে।’’ মেয়রও দাবি করেন, গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের শেষে তিনি জানান, গত সপ্তাহে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১১০০ বেড়ে গিয়েছিল। এ সপ্তাহে বেড়েছে ৯৮৮। গত সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৮০২। চলতি সপ্তাহে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭৭৯।
এ দিকে, এ দিন সকালে নিজের ওয়ার্ডে ডেঙ্গি অভিযান চালাতে গিয়ে মেজাজ হারানোর অভিযোগ উঠল বরাহনগর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ রামকৃষ্ণ পালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঘোরার সময় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে ঢুকে তিনি প্রোমোটারকে ঘাড় ধাক্কা দিয়েছেন। রামকৃষ্ণবলেন, ‘‘ভিতরে বহু জায়গায় জল জমে ছিল। তাই আগে সেগুলি সাফ করে তারপরে নির্মাণের কাজ করতে বলেছিলাম কড়া ভাবে।’’ কিন্তু কোথায় জল জমে রয়েছে, তা দেখে তো পুর স্বাস্থ্য কর্মীদেরই নোটিস দেওয়ার কথা। তা হয়নি কেন? রামকৃষ্ণর দাবি, ‘‘নোটিস দেওয়া হলেও একটা শ্রেণি কথা শোনে না। তাই কড়া ধমক দিতেই হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy