Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
State news

‘সাংসদ-বিধায়করাই নন, মোটা টাকা মাসোহারা দিতে হত পুলিশকেও’, সুদীপ্তের বয়ানই হাতিয়ার সিবিআইয়ের

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে চলা সারদা-তদন্তের ইতিও টানতে চাইছেন তাঁরা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সোমনাথ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:১৭
Share: Save:

শুধুমাত্র সাংসদ বিধায়ক নন, টাকা খেয়েছেন পুলিশের নিচুতলা থেকে শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকেরাও। সুদীপ্ত সেনের এই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তিই সারদা-তদন্তে সব থেকে বড় হাতিয়ার বলে মনে করছে সিবিআই। সুদীপ্তের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এখন আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছেন ময়দানে।এমনটাই সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে চলা সারদা-তদন্তের ইতিও টানতে চাইছেন তাঁরা। ওই সূত্রটির মতে, আগামী নভেম্বর মাসে চূড়ান্ত চার্জশিট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। চার্জশিটে নতুন করে কয়েক জন বিধায়ক এবং সাংসদের নাম ঢুকতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। নাম থাকতে পারে বেশ কয়েক জন পুলিশ অফিসারেরও। শুধুমাত্র সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের বক্তব্যের উপর দাঁড়িয়ে নয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ জোগাড়ের মরিয়া চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ছ’টি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট সহ মোট সাতটি চার্জশিট জমা পড়েছে আদালতে।

সূত্রের খবর, সুদীপ্ত সেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে দাবি করেছেন, এ রাজ্যের বেশ কয়েকটি থানাকে মাসোহারার টাকা পাঠাতে হত। ব্যবসা চালানোর জন্য টাকা দিতে হয়েছে ভিন্‌রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদেরও। সারদা গোষ্ঠীর দেড়শো থেকে দু’শোটি ল্যাপটপ এবং পেনড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাতে সারদার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য উল্লেখ ছিল। যদিও সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করেছে, সুদীপ্ত সেন যে ল্যাপটপ এবং পেনড্রাইভের কথা বলছেন, সে সবের উল্লেখ সিজার লিস্টে পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন উঠছে, এত ল্যাপটপ এবং পেনড্রাইভ গেল কোথায়? কেন সেগুলি সিজার লিস্টে দেখানো হয়নি? কী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল তাতে? সুদীপ্ত সেন যে মাসোহারার কথা বলছেন, তার সবিস্তার রেকর্ড কী ছিল ওই ল্যাপটপ, পেনড্রাইভেই?

আরও পড়ুন: আগাম জামিন পাবেন কি রাজীব কুমার? শুনানি চলছে আলিপুর আদালতে

সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পর রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন (সিট) করে। ওই দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই দলে থাকা অন্য পুলিশ অফিসারদের জেরা করে তারা জানতে পেরেছে, বিভিন্ন বিষয়ে সিটকে নির্দেশ দিতেন রাজীব। যদিও তা অস্বীকার করেছেন বর্তমানে রাজ্যের গোয়েন্দাপ্রধান রাজীব কুমার। এমনটাই দাবি সিবিআই গোয়েন্দাদের। সুদীপ্ত সেন এবং সংস্থার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জেরা করে যা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সিবিআইয়ের এক অফিসার জানিয়েছেন, রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে যে জেরা করলেই এ সব বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে, তা স্পষ্ট হবে। সে কারণেই রাজীবকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল আদালতে। ওই অফিসারের কথায়, ‘‘যদি রাজীব দোষী না-ই হবেন, তা হলে এ ভাবে ‘আত্মগোপন’ করে রয়েছেন কেন? সিবিআই ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬০ ধারায় তাকে সাক্ষী হিসেবে তলব করা হয়েছিল। তিনি তো ‘আত্মগোপন’ করে নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করে ফেলার মতো কাণ্ড করছেন।’’

আরও পড়ুন: ভয়াবহ খরার গ্রাসে পড়বে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা, জানাল নাসা-ইসরোর গবেষণা

খাতায়-কলমে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি ধরা পড়লেও, আরও কয়েকশো কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। কোন কোন প্রভাবশালী সারদার থেকে সুবিধা ভোগ করেছেন, কেনই বা পুলিশকর্মীরা ওই চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন— তা চূড়ান্ত চার্জশিটে স্পষ্ট করে দেওয়া হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Sudipta Sen Kolkata Police Rajeev Kumar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy