Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

‘পরিকল্পিত খুন’! জড়িত কি অতি-পরিচিতরা, দেখছে সিবিআই, ছেঁড়া পাতায় নয়া সূত্র

তদন্তকারীদের সূত্রে বলা হয়েছে, মৃতদেহের পাশে ল্যাপটপ, মোবাইল এবং ডায়েরির কয়েকটি ছেঁড়া পাতা রাখা ছিল বলে কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই ডায়েরিতে হাতের লেখা যাচাই করা হচ্ছে।

আর জি কর হাসপাতালে ঘটনার প্রতিবাদে বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্মীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন আলিপুরে। ছবি: রনজিৎ নন্দী।

আর জি কর হাসপাতালে ঘটনার প্রতিবাদে বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্মীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন আলিপুরে। ছবি: রনজিৎ নন্দী।

  শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৫৪
Share: Save:

আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন ও ধর্ষণের মামলায় মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ডায়েরির ছেঁড়া পাতা। সেই সূত্রে ‘পরিকল্পিত খুন’ এবং হাসপাতালে তাঁর ‘একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি’র (তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, কর্ম বা শিক্ষাক্ষেত্রে অনেকের সঙ্গে সাধারণ পরিচিতির চেয়ে বেশি কথাবার্তা বা বন্ধুত্ব হয়। সেই সূত্রেই ঘনিষ্ঠ বোঝানো হচ্ছে।) জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। তাঁদের সূত্রে দাবি, ডায়েরির পাতায় মেয়েটির যে স্বপ্নের কথা লেখা ছিল, তার সূত্র ধরে তাঁরা আরও কিছু তথ্য অনুসন্ধান করছেন। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, খুন ও ধর্ষণ করার পরে ডায়েরির পাতা সাজিয়ে রাখা হয়ে থাকতে পারে এবং এর পিছনে কাজ করতে পারে মেয়েটির প্রতি আক্রোশ চরিতার্থ করার আনন্দ।

তদন্তকারীদের সূত্রে বলা হয়েছে, মৃতদেহের পাশে ল্যাপটপ, মোবাইল এবং ডায়েরির কয়েকটি ছেঁড়া পাতা রাখা ছিল বলে কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই ডায়েরিতে হাতের লেখা যাচাই করা হচ্ছে। ডায়েরির পাতার‌ লেখা এবং ওই ছাত্রীর অন্যান্য খাতা ও নোটবুকের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার জন্য হস্তলিপিবিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ধর্ষণের ক্ষেত্রে প্রতিরোধ স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটনাস্থলে ধস্তাধস্তির চিহ্ন পাওয়া যায়নি, বরং মাথার পিছনে ল্যাপটপ, মোবাইল অটুট অবস্থায় ছিল। তদন্তকারীদের সূত্রে এ-ও দাবি, খুন ও ধর্ষণের পরে একাধিক ব্যক্তি সেমিনার হলে পরিপাটি করে মৃতদেহ এবং ল্যাপটপ, মোবাইল ও ডায়েরির পাতা সাজিয়ে রাখতে পারে। কারণ, যতটা নিপুণ ভাবে সবটা গোছানো ছিল, তা এক জনের পক্ষে করা সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।

সিবিআই সূত্রে দাবি, ডায়েরির ছেঁড়া পাতায় লেখা রয়েছে, ‘আমি এমডি গোল্ড মেডেলিস্ট হতে চাই। বাবা-মাকে দেখতে হবে আমাকেই।’ আরও একটি কাগজে কালো কালি দিয়ে কিছু একটা লিখে ফের‌ তা কেটে দেওয়া হয়েছিল। সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘কোনও ব্যক্তিগত আক্রোশ অথবা প্রতিহিংসার কারণে যদি ধর্ষণ ও খুন করা হয়ে থাকে, তা হলে খুন করার পর ওই তরুণী চিকিৎসকের স্বপ্ন নষ্ট করে দেওয়া হল বলে পরিতৃপ্তি লাভ করার জন্য আততায়ী বা আততায়ীরা এমন কাজ করে থাকতে পারে।’’ সেই ভাবনা থেকে তরুণী চিকিৎসকের ‘অতি-পরিচিত বা ঘনিষ্ঠ‌ এক বা একাধিক ব্যক্তি’র জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় রায়ের ওই তরুণীর ডায়েরি পাওয়ার কথা নয়। ওই চিকিৎসকের ডায়েরি কোথায় রাখা ছিল, তা একমাত্র হাসপাতালে তাঁর ঘনিষ্ঠেরাই জানতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তেমন কেউ ওই ডায়েরির পাতা মৃতদেহের পাশে রেখে দিতে পারেন, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, ইতিমধ্যে ওই চিকিৎসকের কয়েক জন ঘনিষ্ঠ সহপাঠীর পলিগ্রাফ টেস্ট করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট দেখা হচ্ছে। শুক্রবার আর জি কর হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও মৃত চিকিৎসকের দুই সহপাঠীকেও দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের কয়েক জনকেও।

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Medical College And Hospital Incident CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy