Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Municipality Recruitment Case

অয়নের হয়ে টাকা তুলতেন ‘বড়বাবু’, ফেরত দিতে না পেরেই আত্মহত্যা: নিয়োগ মামলার চার্জশিটে সিবিআই

পুর নিয়োগ মামলার চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, অয়নের এক কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ‘বড়বাবু’র কথা জানতে পেরেছে তারা। অয়নের জন্যই তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ।

(বাঁ দিকে) পুর মামলায় ধৃত অয়ন শীল।— ফাইল চিত্র। সিবিআইয়ের চার্জশিটের অংশ (ডান দিকে)।— নিজস্ব চিত্র।

(বাঁ দিকে) পুর মামলায় ধৃত অয়ন শীল।— ফাইল চিত্র। সিবিআইয়ের চার্জশিটের অংশ (ডান দিকে)।— নিজস্ব চিত্র।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১১:৫৬
Share: Save:

পুর নিয়োগ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অয়ন শীলের জন্য তাঁরই এক কর্মচারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন, চার্জশিটে এমনটাই জানাল সিবিআই। ওই কর্মচারী সুইসাইড নোটে অয়নের নাম লিখে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। অয়নেরই আর এক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা।

সিবিআই পুর নিয়োগ মামলার চার্জশিটে জানিয়েছে, এই মামলার তদন্তের সূত্রে তারা পূর্ণেন্দু চক্রবর্তী নামের এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন, যিনি অয়নের অধীনে কাজ করতেন। সেই পূর্ণেন্দু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের জানান, অয়নের জন্য এক কর্মচারী আত্মঘাতী হয়েছিলেন ২০১৮ সালে। তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে ‘বড়বাবু’ নামে পরিচিত ছিলেন। পুর নিয়োগের ‘মিডলম্যান’ হিসাবে কাজ করতেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের জোগাড় করতেন, তাঁদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন এবং তাঁদের চাকরির বন্দোবস্ত করে দিতেন। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকা তিনি তুলে দিতেন অয়নের হাতে।

এই টাকা তুলতে গিয়েই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ‘বড়বাবু’, সিবিআইকে জানিয়েছেন পূর্ণেন্দু। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়। ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর আত্মঘাতী হন তিনি। সিবিআই জানতে পেরেছে, পুরসভায় চাকরি দেওয়ার নাম করে যাঁদের কাছ থেকে ‘বড়বাবু’ টাকা তুলেছিলেন, তাঁদের কয়েক জন চাকরি পাননি। এর পর ওই টাকা তাঁরা ‘বড়বাবুর’ কাছ থেকে ফেরত চেয়েছিলেন। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, অয়ন সেই টাকা আর ফেরত দেননি। তাতেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ‘বড়বাবু’।

সুইসাইড নোটে ‘বড়বাবু’ লিখে গিয়েছেন, অয়নের জন্যই তিনি মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, অয়নের খপ্পর থেকে বাঁচাতে নিজের পুত্রকে হত্যা করবেন বলেও লিখে গিয়েছিলেন ‘বড়বাবু’।

পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অয়নই তৈরি করতেন বলে চার্জশিটে জানিয়েছে সিবিআই। পূর্ণেন্দুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই তথ্য মিলেছে। তিনি জানিয়েছেন, বইপত্র ঘেঁটে অয়ন নিজেই প্রশ্ন বানাতেন। তাঁকে টাকা দেওয়া প্রার্থীরাই সেই পরীক্ষায় বসতেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাকরি পেয়ে যেতেন। প্রশ্ন বানানোর কাজে অয়নকে সাহায্য করতেন পার্থ নামের এক যুবকও।

এর আগে পুর মামলার চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছিল, অয়নের দুই এজেন্টের মাধ্যমে যাঁরা পুরসভায় চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন নিয়েছিলেন ওই এজেন্টরা। অয়নের মাধ্যমে কলকাতা-সহ ১৬টি পুরসভায় নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে অনেকে চাকরি পেয়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE