Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

‘মুছে ফেলা’ ফুটেজও অস্ত্র

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ৮ অগস্ট গভীর রাতে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গার ফুটেজ এবং অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের গতিবিধির ফুটেজের আরও কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করা চলছে।

সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডল।

সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডল। —ফাইল ছবি।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৮
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন— ৯ অগস্ট এবং ৮ অগস্ট হাসপাতাল এবং টালা থানার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র হাতে এসেছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই সূত্রের খবর, টালা থানা এবং আর জি কর হাসপাতাল, দু’জায়গাতেই সিসি ক্যামেরা ফুটেজের বেশ কিছুটা মুছে ফেলা হয়েছিল। প্রযুক্তির সাহায্যে সেই মুছে যাওয়া ফুটেজের প্রায় ৭০ শতাংশ উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রটির দাবি।

সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “ফুটেজ মুছে ফেলা হলেও ফরেন্সিক পরীক্ষার মাধ্যমে ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার) থেকে তার অনেকটাই উদ্ধার করা যায়। ধাপে ধাপে তা উদ্ধার করা হয়েছে। যা উদ্ধার হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে তার ফরেন্সিক রিপোর্টও হাতে পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুনের পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং পরিকল্পিত অপরাধের ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা অনেকটাই পরিষ্কার। ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুযায়ী ওই সব সূত্র যাচাই করা হচ্ছে।” আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের মোবাইলে বিভিন্ন ফোন-কলের নথিও গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে দেখছে সিবিআই।

সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী পরবর্তী পর্যায়ে সন্দীপ ও অভিজিতের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে। ওই চার্জশিটে খুন, ধর্ষণের বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং প্রমাণ লোপাটের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি তথ্য উল্লেখ করা হবে।” আর জি করের ওই মামলায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে। তাঁর বিষয়েও ৫০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা ফুটেজের নথি জমা দেওয়া হয়েছে বলে ওই সিবিআই কর্তা জানান।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ৮ অগস্ট গভীর রাতে হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গার ফুটেজ এবং অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের গতিবিধির ফুটেজের আরও কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করা চলছে। জেল হেফাজতে থাকা সন্দীপ এবং অভিজিতের ফোনের কল ডিটেলসের ফরেন্সিক রিপোর্টও মেলানো হচ্ছে। তাতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার বেশ কয়েকটি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সূত্রের হদিস মিলছে বলেই তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি।

তদন্তকারীদের কথায়, “সিসি ক্যামেরার ফুটেজের প্রাথমিক ফরেন্সিক রিপোর্টে ঘটনাস্থল অর্থাৎ চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হলের ছবি ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন ফুটেজ নতুন আরও তথ্যের দিগনির্দেশ করেছে। ওই চিকিৎসক কোথায় খুন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, তা-ও ফের খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুযায়ী এর নতুন কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে।”

সিবিআই সূত্রের দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন সন্দীপ এবং অভিজিতের লিখিত বয়ানের সঙ্গে ফরেন্সিক রিপোর্টে উঠে আসা তথ্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক প্রাথমিক রিপোর্ট যাচাই করার পর তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, হেফাজতে থাকাকালীন সন্দীপ এবং অভিজিৎ কৌশলে তদন্তকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করেছিল, এটা পরিষ্কার। ফের ওই দু’জনকে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

CBI R G kar Incident Sandip Ghosh Abhijit Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE