রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে শনিবার সিবিআই তলব করেছিল অভিষেককে। ছবি: সংগৃহীত।
ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, শনিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র যাবতীয় ‘সক্রিয়তার’ নিশানায় তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকার ঠিকানা। আবার ঘটনাচক্রে, আর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর হাজিরাও সেই শনিবারেই! তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় শনিবার সকাল ১১টায় সিবিআই তলব করেছিল অভিষেককে। নির্ধারিত সময়ে নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরেও পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। তার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক ঠিকানায় ইডির হানা শুরু হয়েছে। যাকে ‘কাকতালীয়’ ঘটনা বলে কেউই মনে করছেন না। কারণ, ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ইডির তল্লাশির ঠিকানাগুলি দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের।
দক্ষিণ কলকাতা এলাকায় অভিষেকের বাড়ি। আর দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তাঁর লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবার। শনিবার ইডির প্রথম ‘নিশানা’য় ছিলেন অভিষেকের দফতরের প্রাক্তন কর্মী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (যিনি ‘কালীঘাটের কাকু’ বলেই সমধিক পরিচিত)। বেহালার ফকিরপাড়া রোডে সুজয়ের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ একাধিক ঠিকানায় শনিবার সকাল থেকেই তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডির তদন্তকারী দল। পাশাপাশিই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব।
ইডির নিশানায় শনিবার ছিল অভিষেকের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিষ্ণুপুর বিধানসভা এলাকার বিবিরহাটও। সেখানকার জেলা পরিষদ আসনের তৃণমূল সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্তের বাড়িতে ইডির তল্লাশি শুরু হয়েছে। ইডির অন্য দু’টি দলও ওই এলাকায় রয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী দিলীপ মণ্ডলের পরিচিতি রয়েছে ‘অভিষেক ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদে জ্ঞানানন্দকে জেতাতে ‘বড় ভূমিকা’ ছিল দিলীপের! একই সঙ্গে বেহালা এলাকায় সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় বলে একজনের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। সন্তু নিয়োগকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। নিয়োগকাণ্ডে ধৃত অয়ন দাবি করেছেন, সন্তুকে তিনি ২৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। ইডি তাদের চার্জশিটেও বিষয়টি উল্লেখ করেছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা নির্দেশ দিয়েছিলেন নিয়োগকাণ্ডে ধৃত বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলের চিঠি মামলায় ইডি এবং সিবিআই প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘নজিরবিহীন তৎপরতা’ দেখিয়ে অভিষেককে নোটিস পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। শুক্রবার পাঠানো ওই নোটিসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে বলা হয়, শনিবার সকালেই সিবিআই দফতরে হাজির হতে!
শুক্রবার সিবিআইয়ের নোটিসের কথা জানার পরেই বাঁকুড়ার সোনামুখীতে তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি থামিয়ে রাতে কলকাতায় ফিরে আসেন অভিষেক। তৃণমূল নেতাদের একাংশের মতে, শনিবারের ঘটনা প্রমাণ করে দিচ্ছে, সিবিআই-ইডির এই ‘সক্রিয়তার’ পিছনে রয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। তাঁদের মতে, বিজেপি যে অভিষেককে ভয় পায়, এই ঘটনাতেই তা স্পষ্ট। যে কথা শুক্রবারেই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি অভিষেককে ভয় পেয়েছে। ওরা নবজোয়ার কর্মসূচিকে থামাতে অভিষেককে ডেকে পাঠিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy