লাবু ইসলাম মামলার তদন্তে মঙ্গলবার কোচবিহারে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। —নিজস্ব চিত্র।
জলপাইগুড়ির হোমে ‘অস্বাভাবিক ভাবে মৃত’ নাবালকের দেহের পুনরায় ময়নাতদন্ত করবে সিবিআই। মঙ্গলবার এমনই দাবি করলেন নাবালকের মা সাহিদা বিবি। যদিও এ নিয়ে সিবিআইয়ের তরফে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।
২০২১ সালের ২৪ অগস্ট মারপিটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল লাবু ইসলাম নামে ওই নাবালককে। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের টাপুরহাট এলাকার ওই নাবালকের পরিবারের অভিযোগ, গ্রেফতারির পর দেড় লক্ষ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় লাবুর বিরুদ্ধে গাঁজার মিথ্যা অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছিল। জলপাইগুড়ি হোমে থাকাকালীন তাকে খুন করা হয়।
এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। মঙ্গলবার তার তদন্ত করতে কোচবিহারে লাবুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ৩ সিবিআই আধিকারিক। পরিবার সূত্রে খবর, লাবুর মা সাহিদা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন তাঁরা। সাহিদা জানিয়েছেন, প্রায় আড়াই ঘণ্টা তাঁদের বাড়িতে ছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। তাঁর দাবি, ‘‘লাবুর দেহ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য অনুমতিপত্রে আমার সই নেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দু’এক দিনের মধ্যে সে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে দেহের পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হবে।’’ যদিও মঙ্গলবার তদন্তের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সিবিআই আধিকারিকেরা।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশকে দেড় লক্ষ টাকা না দেওয়ার কারণে মিথ্যা গাঁজার মামলা দেওয়া হয়েছিল লাবুর বিরুদ্ধে। কোচবিহার আদালত থেকে তাকে জলপাইগুড়ি একটি হোমে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে লাবুর উপর অত্যাচার চলত।
২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি হোম থেকে পরিবারকে জানানো হয়, আত্মহত্যা করেছে লাবু। কিন্তু, তা নিয়ে সন্দিহান ছিল পরিবার। এর পর আদালতের দ্বারস্থ হন সাহিদারা।
পরিবারের অভিযোগ, লাবুর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অনেক ভুলভ্রান্তি রয়েছে। রিপোর্টে ১৭ বছরের লাবুর বয়স দেখানো হয়েছে ৩৪ বছর। তার খুনের অভিযোগ করে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। সাহিদা বিবির দাবি, ‘‘এলাকায় মারপিটের ঘটনায় লাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানায় গেলে পুলিশ জানিয়েছিল, দেড় লক্ষ টাকা দিলে লাবু ছাড়া পাবে। কিন্তু সে দিন টাকা জোগাড় করতে না পারায় পুলিশকে দিতে পারিনি। পরের দিন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার পর শুনি, ছেলের নামে গাঁজার মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। নাবালক হওয়ায় আদালত থেকে লাবুকে জলপাইগুড়ি হোমে পাঠানো হয়েছিল। এর পর লাবুর জামিনের জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম আমরা। তার মধ্যেই খবর পাই, ছেলে আত্মহত্যা করেছে।’’ সাহিদার দাবি, ‘‘প্রতি সপ্তাহে হোমে গিয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করেছি। তার উপর অত্যাচার হচ্ছে বলে জানিয়েছিল ছেলে। ওর পেটে কামড়ের গভীর ক্ষত দেখেছি। এ নিয়ে হোম কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগ করলে তাঁরা জানিয়েছিলেন, লাবুর চিকিৎসা চলছে। কিন্তু লাবুর থেকে জানতে পারি, তাকে ডাক্তার দেখানো হয়নি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘লাবুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও আমার আর এক ছেলে ওকে দেখে এসেছিল। কিছু দিন পরেই জামিনের কথা ছিল লাবুর। কেন আত্মহত্যা করবে সে? আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও অনেক গন্ডগোল রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy