সিবিআই অনুমতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে। —ফাইল চিত্র।
সিবিআই কি স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা? না কি তারা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন? পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই তদন্তের অনুমতি সংক্রান্ত মামলায় এই প্রশ্ন উঠে গেল সুপ্রিম কোর্টে। যা নিয়ে যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তি সাজালেন কেন্দ্র, রাজ্যের আইনজীবীরা। আগামী ৯ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই তদন্তের ঢালাও ছাড়পত্র বা ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করার পরেও সিবিআই রাজ্যের অনুমতি ছাড়া একের পর এক মামলায় এফআইআর করতে শুরু করায় সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল রাজ্য সরকার। গত তিন বছর ধরে এই মামলা শীর্ষ আদালতে ঝুলে রয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে। রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি জানান, রাজ্যের অনুমতি বা ‘জেনারেল কনসেন্ট’ ছাড়া সিবিআই কোনও মামলায় তদন্ত করতে পারে না। রাজ্যে ঢোকার আগে তাদের অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। না হলে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এর প্রভাব পড়তে পারে বলে জানান তিনি। অভিযোগ, সিবিআই কোনও মামলায় ঢুকলে তার সূত্র ধরে ইডিও ঢুকে পড়ছে। এই পরিস্থিতির বদল হওয়া দরকার।
সিবিআইয়ের অনুমতি সংক্রান্ত মামলাটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। রাজ্যের যুক্তি সিবিআই কেন্দ্রের অধীন সংস্থা। কপিল আদালতে এ প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশ এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্টের (১৯৪৬) উদাহরণ টানেন। জানান, ওই আইনে বলা হয়েছে, সিবিআই কেন্দ্রের অধীনে থাকা সংস্থা। প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কর্মিবর্গ এবং প্রশিক্ষণ দফতরের অধীনে রয়েছে সিবিআই। কিন্তু সংসদে তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দেন না। সিবিআই স্বাধীন সংস্থা নয়। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও নিরপেক্ষ নয়।’’
এ প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশের যুক্তিও দিয়েছেন কপিল। বলেন, ‘‘সিবিআই কেন্দ্রের একটি হাত। যেমন রাজ্যের হাতে পুলিশ রয়েছে। কার্যপদ্ধতির জন্য তাদের আইন রয়েছে।’’
রাজ্যের পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর বক্তব্য, সিবিআই কেন্দ্রের অধীন নয়। এটি একটি স্বাধীন সংস্থা। ফলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা করায় এই মামলা গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয়। সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘সিবিআই একটি স্বাধীন সংস্থা। কেন্দ্র তাদের নিয়ন্ত্রণ করে না। কেন্দ্র কোনও এফআইআর দায়ের করে না। এই মামলা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে না করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে করা হয়েছে।’’ আদালতে এই মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগও তুলেছেন তিনি। বলেন, ‘‘এর আগে একই বিষয়ে অন্য দু’টি মামলা করা হয়েছিল রাজ্যের তরফে। এই কোর্টে সেই তথ্য গোপন করা হয়েছিল। কী ভাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে তথ্য গোপন করা যায়? এটাই মামলা খারিজের অন্যতম কারণ হতে পারে।’’
বুধবার সিবিআইয়ের অনুমতি সংক্রান্ত মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে শুনানির জন্য উঠেছিল। বিচারপতি জানিয়েছিলেন, গরমের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই শুনানি শেষ করতে হবে। আদালতে গরমের ছুটি শুরু হবে ১৯ মে। ছুটিতে তাঁরা মামলার রায় লিখে ফেলতে চান। যাতে ছুটির পরে আদালত আবার খুললে রায় ঘোষণা করা যায়। সেই মতো বৃহস্পতিবার শুনানি হয়েছে। পরবর্তী শুনানি ৯ মে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy