Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Anubrata Mandal

কেষ্টকে গাড়ি চড়ানো সেই ‘বড়’ ব্যবসায়ী আবার সিবিআই নজরে, বুধবার সকালেই নিজামে তলব

দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মলয়ের। খাস শান্তিনিকেতনে মেডিক্যাল কলেজ বানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ, সেই কলেজেও আর্থিক সাহায্য করে থাকতে পারেন অনুব্রত।

অনুব্রতের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এই ব্যবসায়ী শান্তিনিকেতনে মেডিক্যাল কলেজও তৈরি করেছেন।

অনুব্রতের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত এই ব্যবসায়ী শান্তিনিকেতনে মেডিক্যাল কলেজও তৈরি করেছেন। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২২ ১১:৫০
Share: Save:

বোলপুর জানে অনুব্রত মণ্ডল এক ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ীর গাড়ি চড়ে ঘুরতেন। বীরভূমের সেই ‘বড়’ ব্যবসায়ী মলয় পিটকে ডেকে পাঠাল সিবিআই। সেপ্টেম্বরেও তাঁকে একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

বুধবার সকাল ১১টায় নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে মলয়কে। অভিযোগ, এই মলয়ের অ্যাকাউন্টেই ভোলে ব্যোম চালকলের কোটি কোটি টাকা পাঠানো হত। বীরভূমের এই ভোলে ব্যোম চালকলের মালিক হিসাবে নাম রয়েছে খোদ অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। আবার এই মলয়ের তৈরি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদানও দিয়েছিলেন অনুব্রত।

দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মলয়ের। খাস শান্তিনিকেতনে মেডিক্যাল কলেজ বানিয়েছেন তিনি। এর আগেও অনুব্রতের হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তির খোঁজে নেমে মলয়কে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সে বার টানা বেশ কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল মলয়কে। জানতে চাওয়া হয়েছিল, কী ভাবে অনুব্রতের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়েছে, সে কথাও। বুধবার আবার তাকে ডেকে পাঠানো হল নিজামে।

উল্লেখ্য, মলয় এখন বীরভূমের বড় ব্যবসায়ী হিসাবে নাম করেছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত এক দশকে উল্কার গতিতে উত্থান হয়েছে তাঁর। রাজ্যে বহু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। অন্য ব্যবসাতেও নাগাড়ে সাফল্যের মুখ দেখেছেন তিনি। এই মুহূর্তে তাঁর অধীনে অন্তত কয়েকশো স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বিএড কলেজ, পিটিটিআই প্রতিষ্ঠান, নার্সিং ইনস্টিটিউট, আইআইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ইন্টারন্যাশনাল স্কুল রয়েছে। এমনকি রাজ্যের বাইরেও ত্রিপুরা, অসম, মেঘালয়, মিজোরাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে ছড়িয়ে মলয়ের শিক্ষা ব্যবসার সাম্র্রাজ্য। আর এই সব কিছুই মলয়ের হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।

এ ছাড়াও দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালান মলয়। একটির নাম ‘স্বাধীন ট্রাস্ট’। অন্যটি ‘সতীর্থ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’। এই ট্রাস্টের নামেও বহু বার হয়েছে টাকার আদান-প্রদান। সিবিআই জানিয়েছে, মলয়ের মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন অনুব্রত। সিবিআই মলয়ের কাছে এর আগে জানতে চেয়েছিল মেডিক্যাল কলেজের জন্য এত বিপুল পরিমাণ টাকা কোথা থেকে পেয়েছিলেন তিনি? বুধবার মলয়কে কেন ডাকা হয়েছে তা স্পষ্ট না হলেও অনুমান, গরু পাচারের মামলার তদন্তেই ডাকা হয়েছে তাঁকে। পাচারের টাকা কোনও ভাবে মলয়ের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল কিনা, গরু পাচার-কাণ্ডে তাঁর যোগ রয়েছে কি না, সে সব জানতে চাইতে পারে সিবিআই।

বুধবার অবশ্য মলয় ছাড়াও বোলপুরের অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ এক প্রোমোটার অতনু মজুমদারকে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। অনুমান তাঁকেও গরু পাচার মামলাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

অনুব্রত অবশ্য এখনও জেল হেফাজতেই। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে আদালতে অনুব্রতের বিরুদ্ধে নতুন কোনও তথ্য পেশ করতে পারেনি সিবিআই। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের ভর্ৎসনার মুখেও পড়েছে তারা। আদালত বলেছে, তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত জারি রয়েছে। উপযুক্ত তথ্য ছাড়া বার বার ধৃতের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করা সম্ভব নয়। আদালতের এই নির্দেশের তিন দিনের মাথায় মলয় এবং অতনুকে ডেকে পাঠাল সিবিআই।

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mandal Anubrata Mondal CBI Nizam Palace Cattle Smuggling Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy