Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
University of Gour Banga

সরিয়েছিলেন রাজ্যপাল, কয়েক ঘণ্টায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পুনর্বহাল রাজ্যের

রজতকিশোরকে গত বছর অগস্টে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে বহাল করেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। রবিবার রাতে তাঁকে মেল পাঠিয়ে উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

image of rajat

রজতকিশোর দে। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪২
Share: Save:

সরিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তার কয়েক ঘণ্টা পর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে আবার রজতকিশোর দে-কে পুনর্বহাল করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে রাজ্য। রজতকিশোর জানিয়েছেন, সরকারের প্রতি ‘মান্যতা’ দিয়ে আগামী দিনে যে দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে, তা করবেন।

রজতকিশোরকে গত বছর অগস্টে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে বহাল করেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। রবিবার রাতে তাঁকে মেল পাঠিয়ে উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ওই পদে পুনর্বহালের পর রজতকিশোর বলেন, ‘‘শিক্ষক হিসাবে প্রথমেই বলব, এটা হতাশার। যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা সকলে জানেন, কী ভাবে সব দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। তার পর যদি এমন চিঠি আসে, যাতে আমার সম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে, তাতে খারাপ লাগে। অন্য উপাচার্যদের ভাবতে হবে, এটা কি আমার প্রাপ্য ছিল?’’ তিনি এও জানিয়েছেন, তাঁকে অকারণে ‘হেনস্থা করার প্রয়াস’ হয়েছে।

তবে তিনি নিজের কাজ চালিয়ে যাবেন, তা-ও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘রবিবার রাতে যে মেল পেয়েছিলাম, তাতে আমায় অপসারিত করা হয়েছিল। সোমবার দুপুর আড়াইটের সময় একটি মেল এসেছে। তাতে উপাচার্যের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সরকারের প্রতি মান্যতা দিয়ে আগামী দিনে যে দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়েছে, তা করব।’’

কেন নিয়োগের ন’মাসের মাথায় রজতকিশোরকে সরানো হয়েছে, তা আচার্যের তরফে পাঠানো ই-মেলে স্পষ্ট করে বলা হয়নি। তৃণমূলের দাবি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সাম্প্রতিক কনভেনশনের জেরেই রজতকিশোরকে সরানো হয়েছে। সম্প্রতি তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সভা বসেছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সভাপতি হিসাবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ঘটনাচক্রে সেই সভার পরেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে রজতকিশোরকে অপসারণের ই-মেল যায়। এই নিয়ে সোমবার রাজ্যপালের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন শিক্ষামন্ত্রী। ‘এবিপি আনন্দ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রাত্য বলেন, ‘‘এই লোকটার (রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস) পাগলামি এবং বোকামি দেখতে দেখতে রাজ্যবাসী ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। দু’দিন আগে উত্তরবঙ্গে আমাদের রাজ্য অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার কনভেনশন হয়। সেখানে অস্থায়ী উপাচার্য উপস্থিতও ছিলেন না। কিন্তু রাজ্যপালের গোসা হয়েছে। সেই কারণেই নির্বাচনী বিধিনষেধ না মেনে এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উড়িয়ে দিয়ে রবিবার মধ্যরাতে ওই উপাচার্যকে চিঠি পাঠিয়ে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।’’

উপচার্য নিয়োগ নিয়ে গত বছর প্রকাশ্যে এসেছিল রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। উপাচার্য নেই , এ রকম একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল বোস। ওই উপাচার্যদের বেতন বন্ধ করে দেয় শিক্ষা দফতর। রাজ্যের যুক্তি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না আচার্য। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে জানিয়েছিল, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে চলতি সঙ্কট কাটাতে সাহায্য করতে হবে। পাশাপাশি, পারস্পরিক মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির দিকে নজর দেওয়ার জন্য রাজ্য এবং রাজ্যপাল, দু’পক্ষকেই উদ্যোগী হতে বলে শীর্ষ আদালত। শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট মৌখিক ভাবে এও জানায়, সার্চ কমিটির মাধ্যমেই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হবে। রতজকিশোরকে পুনর্বহাল করে সেই প্রসঙ্গও তুলেছে রাজ্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy