Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

Covid-19: আড়াই মাসে দু’বার করোনা পজিটিভ, তবু ক্যানসার রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডি নেই

অনেক ক্ষেত্রে ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়।

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২১ ১৭:১৫
Share: Save:

একে তো ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। তার উপর আড়াই মাসের মধ্যে দু’বার করোনার কবলে বাগুইআটির শ্রাবণী সরকার। এতেই শেষ নয়। দু’বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেও করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি শ্রাবণীর শরীরে। যা কিছুটা বিরল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রথম বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িতে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে যান শ্রাবণী। কিন্তু দ্বিতীয় বার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট থাকায় ফুলবাগানের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। দেওয়া হয় রেমডেসিভির ওষুধও। চিকিৎসক দেবরাজ যশের তত্ত্বাবধানে করোনার চিকিৎসা চলে তাঁর। দেবরাজের কথায়, ‘‘ প্রথম বারের থেকে দ্বিতীয় বার করোনা বাড়াবাড়ি রূপ নেয়। কিন্তু আড়াই মাসের মধ্যে দু’বার করোনা আক্রান্ত হয়েও কোনও অ্যান্টিবডি তৈরি না হওয়াকে স্বাভাবিক ঘটনা বলা যায় না।’’

করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সাধারণত ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরে তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। পরের বার একই ভাইরাস আক্রমণ চালালে দেহের মেমরি সেল সচেতন হয়ে ওঠে এবং শরীরে থাকা অ্যান্টিবডি রোগ প্রতিরোধ করে। কিন্তু শ্রাবণীর মতো যাঁরা কঠিন রোগে আক্রান্ত বা যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রে করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষমতা কমে যেতে বা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তখন এই ধরনের ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতীকী ছবি

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন অ্যান্ড ইমিউনো হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান, চিকিৎসক প্রসূন ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘এই ধরনের ঘটনা কিছুটা বিরল তো বটেই। অনেক ক্ষেত্রে ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। এমন কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, যা সাধারণ ভাবে ব্যখ্যা করা যায় না। কিন্তু এর বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যার খোঁজ চালাতে হবে আমাদের।’’

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়ের মতে, এ ক্ষেত্রে রোগী টিকা নিয়েছেন কি না সেটাও দেখা প্রয়োজন। ক্যানসারের জন্য কেমোথেরাপি চলায় সত্যিই টিকা নিতে পারেননি শ্রাবণী। এর মধ্যেই প্রথম বার করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার তিন মাস পর টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু তার আগেই দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত হওয়ায় আর টিকা নেওয়া হয়নি, বলে জানান শ্রাবণী। গৌতমের মতে, ‘‘ক্যানসার রোগীদের করোনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে দু’বার করোনা আক্রান্ত হয়েও অ্যান্টিবডি তৈরি না হওয়া অস্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’

তবে দু’বার করোনা আক্রান্ত হয়েও, অ্যান্টিবডির সুরক্ষা না পাওয়া শ্রাবণীর কথায়, ‘‘এমনিই আমার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তার উপর দু’বার করোনা হয়ে গেল। চিকিৎসক বলছেন আমার শরীরে করোনার বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়নি। ভয় লাগছে যে, তৃতীয় বারও না করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ি।’’ চিকিৎসকদের মতে, শরীরে করোনার বিরুদ্ধে ঢাল তৈরি না হলে একাধিক বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

cancer Antibody Hospitalised COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy