গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার উত্তরপত্রই হারিয়ে ফেলল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়! বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অন্তত ১২০ জন পড়ুয়ার উত্তরপত্র হারিয়ে গিয়েছে। যার জেরে প্রশ্নের মুখে সেই সব পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ। এই বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর বক্তব্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় খাতা হারায়নি। এর জন্য দায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ। শান্তার কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় খাতা হারায়নি। খাতা হারিয়েছে কলেজগুলি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৬ বিভাগ রয়েছে। কোনও দিন এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। ইউজি কলেজগুলিতে বাম আমলে পিজি কোর্স খোলা হয়েছিল। সেখানে অতিথি শিক্ষকেরা স্নাতকোত্তরের শিক্ষকদের মতো কর্তব্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নন। এর ফলেই যত দুর্গতি।’’
উপাচার্য বলেন, ‘‘এক কলেজ থেকে খাতা অন্য কলেজে যায়। সেখান থেকেই খাতা হারিয়ে গিয়েছে। শিক্ষকদের গাফিলতির জন্যই এটা হয়েছে। শিক্ষকরা যে কাজ করেছেন, সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শিক্ষকদের মূলত তিনটি কাজ— পড়ানো ,পরীক্ষা নেওয়া এবং খাতা দেখে নম্বর জমা দেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট কলেজের প্রিন্সিপালকে জানানো হবে, তাঁরা যেন তদন্ত কমিটি করে এ বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে এবং তার রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জমা দেয়। সেখানে কী শাস্তি নেওয়া হচ্ছে, সেটাও উল্লেখ করে। এই শাস্তি যদি পছন্দ না হয়, তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে আরও কঠোর শাস্তির কথা সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিকে জানানো হবে। একটি কলেজের পরীক্ষক ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন যে, তাঁর কাছ থেকে খাতা হারিয়ে গিয়েছে। আর একটি কলেজের পরীক্ষক এবং পিজি কো-অর্ডিনেটর সঠিক উত্তর দিতে পারছে না।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১৯টি কলেজে বাংলা স্নাতকোত্তরের কোর্স পড়ানো হয়। গত এপ্রিল মাসে পরীক্ষা হয়েছিল। যে ১২০ জন পড়ুয়ার উত্তরপত্র খোয়া গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কলেজের ছাত্রছাত্রী। কলকাতার দু’টি কলেজের পড়ুয়ারাও রয়েছেন সেই তালিকায়। প্রত্যেকেই প্রথম বর্ষের পড়ুয়া।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, উত্তরপত্র হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সিন্ডিকেটের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাঁদের উত্তরপত্র হারিয়েছে, তাঁদের দু’টি বিকল্প দেওয়া হবে। প্রথম বিকল্প— ওই পড়ুয়ারা যদি চান, আবার পরীক্ষায় বসতে পারেন। দ্বিতীয় বিকল্প— তাঁরা যদি নতুন করে পরীক্ষায় বসতে না চান, তবে প্রথম সেমিস্টারের যে বিষয় সবচেয়ে বেশি নম্বর থাকবে, তা সেই হারিয়ে যাওয়া খাতার নম্বর হিসাবে গণ্য হবে। যদিও এই সিদ্ধান্তে উপাচার্যের অনুমোদন মেলেনি।
উত্তরপত্র হারানোর বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নিয়োগ করা অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত। উনি ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাববেন কখন? এই খাতা হারানোর নেপথ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় গাফিলতি রয়েছে। কলেজ খুললেই আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy