রাজ্য প্রশাসনের দুই প্রধান রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী আদালতে লড়াই করছেন, এই দৃষ্টান্ত কারও জন্যই সুখকর নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের করা মামলায় এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের পরামর্শ, আদালতে লড়াই না-করে দু’পক্ষ ‘চায়ে পে চর্চা’য় বিষয়টি মিটিয়ে নিক। বিচারপতির ওই পরামর্শ গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীরা।
মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সওয়াল, আদালতের এই পরামর্শ নিয়ে তাঁদের আপত্তি নেই। বিষয়টি নির্দেশনামায় উল্লেখ করা হলে ভাল হয়। বিচারপতি রাও জানান, আপাতত মৌখিক ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন পড়লে নির্দেশ দেওয়া হবে। হাই কোর্ট জানায়, দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হল। দু’পক্ষ মিটিয়ে নিক। আগামী ৯ এপ্রিল এই মামলার শুনানি।
মমতার আর এক আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, একটা ‘চায়ে পে চর্চা’য় সমস্যা নেই। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আরও সহনশীল হওয়া দরকার। কল্যাণের বক্তব্যের বিরোধিতা করে রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, “আমার মক্কেল একেবারেই রাজনৈতিক ব্যক্তি নন। তিনি একটি সাংবিধানিক পদে রয়েছেন।’’ কল্যাণের পাল্টা জবাব, “আপনি রাজনৈতিক ব্যক্তি বলেই এই মামলা পেয়েছেন।”
মমতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের আইনজীবী হলফনামা দাখিল করার জন্য অতিরিক্ত সময় চান। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, “আরও সময় চাইছেন? মামলাটি নিয়ে আপনি সিরিয়াস তো? রাজ্যপালের মামলার কী দরকার?” এর পরেই মমতার আইনজীবী কল্যাণের কটাক্ষ, “এমনিতেই রাজ্যপাল রক্ষাকবচ পান। রাজ্যপালের এই ধরনের পদক্ষেপের কথা সংবিধান রচয়িতারা চিন্তা করেননি। তা হলে এমন আইন বানাতেন না।”
আরও পড়ুন:
লোকসভা ভোটের সঙ্গেই বাংলায় দু’টি আসনে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়েছিল। সেই ভোটে বরাহনগর এবং ভগবানগোলা থেকে জিতেছিলেন যথাক্রমে তৃণমূলের সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকার। তাঁদের শপথগ্রহণে জটিলতা নিয়ে রাজ্যপালের সমালোচনা করেছিলেন মমতা, সায়ন্তিকা, রায়াত এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। ওই চার জনের নামেই মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস।