Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪
Calcutta High Court

মৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে পুলিশের হুমকি, পদক্ষেপ প্রয়োজন, জানালেন বিচারপতি

হুগলির আরামবাগের এমনই একটি ঘটনায় বুধবার তদন্তকারী অফিসারকে তিরস্কার করেছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনেও একই ঘটনা দেখে তিনি প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

Calcutta High Court

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৩৬
Share: Save:

খুনের অভিযোগ মেলার পরেও কেন খুনের মামলা রুজু হয়নি, তা নিয়ে ফের কলকাতা হাই কোর্টের তোপের মুখে পড়ল রাজ্য পুলিশ।

হুগলির আরামবাগের এমনই একটি ঘটনায় বুধবার তদন্তকারী অফিসারকে তিরস্কার করেছিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনেও একই ঘটনা দেখে তিনি প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘খুনের মামলাতেও গুরুতর অভিযোগ খুঁজে পেলেন না?’’ কেন খুনের মামলা যোগ করা হয়নি তার সদুত্তর এ দিন রাজ্যের কৌঁসুলিও দিতে পারেননি। রাজ্যের তরফে এই মামলায় সময় চাওয়া হয়। তা মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি। তবে এমন গুরুতর মামলাতেও তদন্তকারীদের ভূমিকা দেখে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রয়োজন।

গত বিধানসভা ভোটের পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে শ্রীকান্ত পাত্র নামে এক বিজেপি কর্মীর দেহ উদ্ধার হয়। হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে তাঁর স্ত্রী বাসন্তী পাত্র জানান, তাঁদের পরিবার বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে অভিযুক্তেরা ভাঙচুর করেন এবং আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধে অবশ্য তাঁরা সে সময় রণে ভঙ্গ দিয়েছিলেন। তাতে হামলা বন্ধ হয়নি। বেশ কিছু দিন বাড়িছাড়া ছিলেন তাঁরা। এ ব্যাপারে দাঁতন থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তাঁদের তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিয়েছিল বলেও অভিযোগ।

বাসন্তীর অভিযোগ, ২০২১ সালের ২০ অগস্ট শ্রীকান্ত রাতে একটি পুকুরে মাছ ধরার জাল লাগাতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে অভিযুক্তেরা তাঁকে লাঠি, রড দিয়ে মারধর করেন এবং তাঁর দেহ একটি পরিত্যক্ত শৌচাগারে ফেলে পালান। বাসন্তী আদালতকে জানিয়েছেন, ঘটনার পরের দিন দাঁতন থানার আইসি এবং আরও কয়েক জন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী তাঁদের বাড়ি যান। দুর্ঘটনায় শ্রীকান্তের মৃত্যু হয়েছে এই মর্মে অভিযোগ লেখাতে চান। বাসন্তী রাজি না-হলে ‘ফল ভাল হবে না’ বলে শাসিয়ে আসেন। এর পরে পুলিশের বিভিন্ন মহলে এবং সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও তার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হলে পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর ডিভিশন বেঞ্চ খুন, ধর্ষণের মতো ঘটনার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল। তার পরেও শ্রীকান্তের মৃত্যুর ঘটনা কেন গুরুত্ব পেল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আইনজীবীদের অভিযোগ, কোনও অভিযোগ যদি রাজ্য পুলিশ ধামাচাপা দিয়ে রাখে তা হলে সেই তথ্য সিবিআইয়ের কাছে পৌঁছনোর কথা নয়। বাসন্তীর দাবি, তিনি সিবিআইকেও ওই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। তাই সিবিআই কেন বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া করল না, সেই প্রশ্নও উঠতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court BJP police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE