হাই কোর্টের নির্দেশে অস্বস্তি বৃদ্ধি শুভেন্দু অধিকারীর। — ফাইল চিত্র।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ থাকলে এফআইআর দায়ের করা যাবে। সে ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে না। বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশই দিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে এ ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে হবে পুলিশকে। অভিযোগ সত্য হলে এবং তা গ্রহণযোগ্য মনে হলে এফআইআর করা যাবে।
বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী এক নির্দেশে জানিয়েছে, বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে পুলিশকে তা খতিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে। পুলিশ সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে। যদি দেখা যায়, অভিযোগ সত্য এবং তা গ্রহণযোগ্য, তা হলে পুলিশ এফআইআর করতে পারবে। তবে গ্রেফতার বা কড়া পদক্ষেপ করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। জনৈক সুমন সিংহের করা জনস্বার্থ মামলায় আপাতত এই নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। চার সপ্তাহ পরে এই মামলার আবার শুনানি রয়েছে।
গত বছর ডিসেম্বরে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশের দায়ের করা ২৬টি এফআইআর-এ স্থগিতাদেশ দেয়। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নতুন মামলা করতে গেলেও আদালতের অনুমতি নিতে হবে বলে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল।
তাঁর বিরুদ্ধে হয়ে চলা একের পর এক এফআইআরের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। আদালতের কাছে তাঁর আবেদন ছিল, হয় এফআইআরগুলি খারিজ করে দেওয়া হোক, নয়তো অভিযোগের তদন্ত করুক সিবিআই। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, শুভেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি মানুষের ভোটে নির্বাচিত। পুলিশ নিজে অথবা অন্য কারও নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনে জনগণের প্রতি বিরোধী দলনেতার কর্তব্য স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে।
সম্প্রতি শুভেন্দুকে এই ‘রক্ষাকবচ’ দেওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি আঙুল তুলেছিলেন বিচারপতি মান্থার দিকে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই একজন বিচারপতি শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছেন। ভবিষ্যতে তিনি কোনও অপকর্ম করলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাবে না! এফআইআর করা যাবে না!’’ একই সঙ্গে বিচারপতির উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি যদি প্রোটেকশন চাইতে যাই, আমায় দেবেন? খালি শুভেন্দু অধিকারীর ছত্রছায়ায় থাকা নেতাদের প্রোটেকশন দেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের নেতার কথায়, ‘‘আমি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলছি। তাতে আমার বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিক।’’ এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে তীব্র কটাক্ষ করেছিল বিরোধী দলগুলি।
এ বার একটি মাত্র জনস্বার্থ মামলার নিরিখে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে পুলিশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে। করতে পারবে এফআইআর-ও। তবে গ্রেফতার বা কড়া পদক্ষেপ করতে গেলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩৬১ নম্বর ধারা অনুযায়ী দেশের রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপাল ফৌজদারী মামলা থেকে রক্ষাকবচ পেয়ে থাকেন।
(এক জন নির্বাচিত সাংসদের জনসমক্ষে করা মন্তব্য এই প্রতিবেদনে পুনর্বার তুলে ধরা হয়েছে মাত্র। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক, সম্পাদক এবং সমগ্র বার্তা বিভাগের কর্মীরা এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক, সম্পাদক এবং কর্তৃপক্ষের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা এবং মাননীয় বিচারপতিদের প্রতি আস্থা, শ্রদ্ধা অটুট এবং অসীম। সম্মাননীয় পাঠক বা সংশ্লিষ্ট অন্য কেউ এই প্রতিবেদনকে কোনও ভাবেই যেন বিচারব্যবস্থা এবং বিচারপতিদের সম্পর্কে অশোভন মন্তব্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অনুমোদন কিংবা সমর্থন হিসেবে বিবেচনা না করেন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy