কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় যে ‘চক্রান্ত’ হয়েছে, তার সঙ্গে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকেরাও যুক্ত বলে মনে করছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই ‘আসল দোষী’দের শাস্তি চেয়েছে আদালত। পুরসভা এবং রাজ্যকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
গার্ডেনরিচকাণ্ডে সোমবার আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য এবং পুরসভা। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত গার্ডেনরিচের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এক জন পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। রাজ্যের রিপোর্ট দেখে ওই বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘এই ধরনের গ্রেফতারি দেখতে ভাল লাগে। কিন্তু পুরসভার যে আধিকারিকদের সাহায্যে বেআইনি নির্মাণ হল, তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে?’’ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুরসভার যে আধিকারিকেরা এত দিন চুপ করে ছিলেন, তাঁরাও এই চক্রান্তে যুক্ত। তাঁরাই আসল দোষী। এটাও তদন্ত করে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলাতেই সোমবার আদালত জানায়, বেআইনি নির্মাণের নেপথ্যে পুর আধিকারিকদের নিষ্ক্রিয়তার ভূমিকা ছিল। পুরসভার উদ্দেশে বিচারপতি বাগচীর প্রশ্ন, ‘‘পুর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কি তদন্ত শুরু হয়েছে? না কি বেআইনি নির্মাণ দেখেও যাঁরা চুপ করে বসে ছিলেন, পুরসভার সেই আধিকারিকদের পুরস্কৃত করা হয়েছে?’’ বিচারপতি জানান, ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে যথাযথ পদক্ষেপ চায় আদালত। প্রয়োজনে তাঁদের সাসপেন্ড করুক পুরসভা। হাই কোর্টের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পুরসভার আইনজীবী জানান, কয়েক জন আধিকারিককে ইতিমধ্যে শোকজ় করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের যুক্তি, ২০২২ সাল থেকে এই ধরনের বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদ করছেন বলে দাবি করেছেন মামলাকারী। কিন্তু এত দিন তিনি আদালতে আসেননি কেন? এই ধরনের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা বন্ধ হওয়া উচিত বলেও আদালতে জানান রাজ্যের আইনজীবী। তাঁর যুক্তি শুনে বিচারপতি বাগচী পাল্টা বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণের উপর নজরদারি এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আইন রয়েছে। মানুষের প্রাণ এবং সম্পত্তি রক্ষা করার বৈধ উপায় রয়েছে। কিন্তু তার পরেও আপনাদের আধিকারিক এত দিন বসে ছিলেন কেন?’’ মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।
গার্ডেনরিচে গত ১৭ মার্চ একটি নির্মীয়মাণ পাঁচ তলা বহুতল ভেঙে পড়ে পাশের ঝুপড়ির উপরে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কলকাতার পুর প্রশাসনকে। ওই বহুতল যে বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছিল, তা মেনে নিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি ওই এলাকার বিধায়কও বটে। ঘটনায় পুরসভার তরফে তিন জন ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ় করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy